বন্ধু শহীদের সাথে ওর চাঁচার বাসা মালিবাগে যাই। ড্রয়িংরুমে বসে আছি।টি টেবিলের ওপর রাখা বিভিন্ন ম্যাগাজিন আর পত্রিকা হাতে নিয়ে দেখছি। তখনই আমার একটা পরিচিত মাসিক পত্রিকা চোখে পড়ে। আমি আমার কাঙ্খিত পাতাটি খুজে বের করতেই মনে হলো হৃদপিন্ডটা বুক থেকে বেরিয়ে এলো। এক সময় বন্ধুর চাচাত বোন রুনা আপাকে (ঢাকা বিশ্ববাদ্যালয়ের বাংলার ছাত্রী)বললাম, এই কবিতাটা পড়ে দেখুনতো কেমন লাগে।
হাতে নিয়ে বলল, কী এমন লেখা?
পড়ে দেখুন কেমন লাগে!
কবিতা ভাই আমার ভালো লাগে না, যদিও বাংলাতে পড়ি। চোখটা সরু করে বলল, এটা কি তোমার লেখা?
হ্যা।
কীভাবে লেখো? আমি তো সাহিত্যের ছাত্রী হয়েও লিখতে পারি না। লেখা ভালো হয়েছে ( জানি, এটা তিনি আমাকে খুশি করার জন্য বলেছেন)। তুমি এটা নিয়ে যেতে পারো। বন্ধুটি জানে আমি কবিতা লিখি (সবাই জানে আমি কিছু একটা লিখি, এবং এই নিয়ে কত ঠাট্টা, মশকরা শুনি। কেউ কবিয়াল বলে ডাকে।যদিও মাথায় লম্বা চুল বা কাঁধে ব্যাগ ঝুলে না)
ছোট্টবেলা থেকেই কবিতা আর গল্প লিখতে ভালবাসতাম। কারো কাছে দিলে কেউ আগ্রহ নিয়ে পড়ত, কেউ টিটকারি মরে বলত তোর লেখা ছাপ হোক, বাজার থেকে কিনে পড়ব । তারপর নিজের গাঁটের পয়সা খরচ করে বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকা আর মাসিক ম্যাগাজিনে কবিতা পাঠিয়েছি। কিছু ছাপা হয়েছে, কিছু মনোনীত হয় নি, কিছু সংশোধন করে নাম পাল্টে ছাপিয়েছে।
তারপর বইও বাজারে এসেছে। (প্রকাশকরা আগ্রহ নিয়ে নয়, নতুন লেখকের নাম শুনলে তাদের এলার্জি হয়! টাকা পয়সা হাতিয়ে নেবার কৌশল করে। আমি নিজেই পুরষ্কারের টাকা কখনো কারো উপহারের টাকা দিয়ে ছাপিয়েছি বাংলাবাজার থেকে।)
২০০৮ সালে যখন আমার ইন্টারনেটে হাতেখড়ি হয় (শুধুই ফেসবুক আর ইমেইল চ্যাটিংয়ে সীমাবদ্ধ) ফেসবুকে কবিতা পোস্ট করতাম, তারপর বিভিন্ন ব্লগ আর পেইজে কবিতা পোস্ট করি। একদিন (২০১২ এর শেষে ) গুগলে বাংলা কবিতা লিখে সার্চ দিলে আমাদের এই পাতাটি দেখতে পাই। সেদিন কী যে আনন্দ পেয়েছিলাম তা ভাষায় বর্ণনা করা যাবে না। খুশির চোটে প্রতিদিন (তখন সুযোগ ছিল) তিনটি করে কবিতা পোস্ট করতাম। আমার কবিতার বই থেকেও অনেক পোস্ট করেছি। তখন হয়তো নিয়মিত ৪০ জনের মত লিখত! এখনতো খুবই জমজমাট। মনে হয় দৈনিক প্রায় দেড়শ কবি কবিতা পোস্ট করছেন।
মাঝে আমি ছয়মাসের মত নিয়মিত ছিলাম না। একমাস ধরে নিয়মিত আসরে চোখ রাখছি। অনেক কিছুই আমার চোখে পড়ে নি। গতকাল এডমিনের আলোচনা বিভাগ আর আসর বিভাগে কিছু লেখা পড়লাম (আগে কেন পড়ে নি বুঝতে পারছি না)। এই আসর ২০০৯ সাল থেকে চালু অথচ আমার মত কবিতা পাগলের চোখে পড়ে নি। এটাকেই বলে কাপাল! তারপরও এডমিনের লেখা পড়ে খুবই ভালো লাগল। এই পেজটি খোলার প্রেক্ষাপট শুনে আমিই খুবই আপ্লুত! আমি চির কৃতজ্ঞ! জানলাম অনেকে নাকি বিভিন্ন মন্তব্য করছেন, আসরের পরিবেশ নষ্ট করছেন। আমি সেদিকে না তাকিয়ে বলতে চাই, একটা প্রশাসন চলে কতৃপক্ষের দিক-নির্দেশনায়! সুতরাং আমাদের মত ( কৌশলি বা সৌখিন ) কবিদের কথায় মন খারাপ না করে এডমিনের ( অনেকদিন পর যাকে জানলাম) উচিত বাংলা কবিতার ব্যাপক প্রচার প্রসার আর কবিদের প্রমোটে আরো নজর দেয়া (যদিও তিনি সেটা করছেন)।
সবাইকে ধন্যবাদ, যারা এই পর্যন্ত লেখাটা পড়েছেন। এডমিন মহোদয়( যুগল)কে আমার পক্ষ থেকে আন্তরিক মোবারকবাদ। আপনি ভালো থাকুন, সুস্থ্য থাকুন!! এই আসরটি যেন বন্ধ না হয়।
বি.দ্র: লেখাতে বানান বিভ্রাটের জন্য ক্ষমা প্রার্থী।