এক ইহুদি বাদশা কতৃক খৃষ্টান হত্যার কাহিনী:—
একদা ইহুদি বাদশা ছিল সে ভীষণ অত্যাচারী
ঈসা নবীরও দুশমন ছিল নাসারা-নিধনকারী ।
ঈসা নবীর সে শরিয়ত ছিল ওই জামানার প্রাণ
ঈসা ও মুসার দুই শরিয়তে ছিল না তো ব্যবধান ।
সত্য প্রচারে দুই নবী ছিল একতার হাত ধরি
টেরাচোখা ওই বাদশা দিল এ একতা ছিন্ন করি ।
ঘটনার প্রেক্ষাপটে উদাহরণ:—
কোন উস্তাদে টেরাচোখা তার শিষ্যের তরে যাচে
নিয়ে আসো যাও, ঘরের ভিতরে একটা বোতল আছে ।
টেরা তাড়াতাড়ি ঘরের ভিতর বোতল আনতে গেল
টেরা চোখে তার একটির স্থানে দুইটা দেখতে পেল ।
টেরায় আসিয়া জিজ্ঞাসা করে, দুইটা বোতল একি
কোনটা আনবো বুঝিয়ে আমারে বলিয়া দেন তো দেখি ।
টেরামি ছাড়িয়া, একটারে দুটি ভুল দেখা বাদ দাও
ওস্তাদ বলে, ভালো করে দেখো আবারো ভিতরে যাও ।
টেরায় বলিলো, হুজুর আমি তো স্বচক্ষে দেখি দুটি
ওস্তাদ বলে, বিরক্ত হয়ে একটারে ফেল টুটি ।
একটি ভাঙতে দুটোই চূর্ণ হয়ে যায় সম্মুখে
মানুষ এমনি টেরা হয়ে যায় নফস ও ক্রোধে ঝুঁকে । (৮শ)
নফস এবং ক্রোধ মানুষকে টেরা বানাইয়া ফেলে
সৎপথ হতে ফিরাইয়া মন বিপথে দেয় যে ঠেলে ।
স্বার্থই যদি অভিপ্রায় হয় থাকে না কাজের গতি
অন্তর হতে শত পর্দায় ঢেকে যায় চোখ অতি ।
বিচারপতির ঘুষ গ্রহণের আশা যদি থাকে মূল
তবে সে-তো তার বিবাদী ও বাদী চিনিতে করবে ভুল ।
ঘটনায় প্রত্যাবর্তন:—
সে বাদশারও ইহুদিসুলভ বিদ্বেষী টেরাচোখ
হে আল্লাহ্, এই ইহুদি হইতে পৃথিবী মুক্ত হোক ।
শত মাযলুম হত্যা করিয়া মনে মনে খুব খোশ
মুসার ধর্ম রক্ষা করেছি, এটা কী আমার দোষ !
(মাওলানা জালালুদ্দিন রুমি রহ.-এর অমর গ্রন্থ মসনবী শরীফ থেকে অনুদিত)
মাত্রাবৃত্ত ছন্দঃ ৬+৬+৬+২