আমার ধমনীতে বয়ে চলে কৃষক বাপ দাদার রক্ত,
আমার বুকে কাঁপন তুলে মাটির সোদা গন্ধ,
গমের সোনালী শীষের স্মৃতি আজো ঝলমলে,
ইরি ধানের কাদামাখা খেতে পা ভিজাই না বলে,
হৃদয়ের গভীরে ভীষণ অপরাধবোধ কাজ করে,
আমি কুন্ঠিত নই আমার কৃষক পূর্বপুরুষের পরিচয়ে।
রবিশস্যের বাড়ন্ত লতা পাতা আর ফসলের ভিড়ে,
ফুলকপি বাঁধাকপি ধনেপাতার ঔদ্ধত্য শিরে,
নরম মাটির আইলের নিচের গোলআলুর চারায়,
কচুরিপানার স্তুপে লাগানো লাউয়ের মাচায়,
আমার বিগত শৈশব আষ্ঠেপৃষ্ঠে মিশে আছে,
অফুরন্ত মানসিক শক্তির ভান্ডার আমার কাছে।
হাল চাষের দাগ এখনো আছে হাতের ভাঁজে,
বিলের মাটি পাওয়া যাবে পায়ের নখের খাঁজে,
বাংলা ঘরের বেড়ায় আজও গোঁজা কাস্তেটা,
এখনো ভুলিনি শনের তৈরি মাথালের কথা,
সব কিছু স্মৃতিতে উজ্জ্বল এতোদিন পর,
নাড়ীপুতা আঙিনা আর গৃহস্থের কুড়ে ঘর।
বর্ষার নতুন জলের বাহারী মাছের কথা,
সওদাগরের পাটের না'য়ের অলস যাত্রা,
বিলের জল থেকে তুলে আনা শাপলা শালুক,
রাত জেগে শুনা গ্রাম্য বাউলের গানের সুর,
সারা জীবন আগলে রাখতে চাই মনের গভীরে,
শিকড়ের কথা বলতে চাই দৃপ্ত অহংকারে।