একবার টেরাকোটায় খোদিত প্রতিমার মতো
তোমার মুখে তাকিয়ে ভাবছিলাম,
কিভাবে তোমার রূপের স্তুতি করি?
চাঁদ বলবো তোমায়?
না, সে তো অনেকেই অনেকবার বলেছে।
জ্যোৎস্না?
না, সে ও বহুবার বহু কবি বলে গিয়েছেন।
তার চাইতে ভালো, বলি,
তুমি এক লাবণ্যে ভরা নদী, বয়ে যাও নিশ্চুপে,
হৃদয়ের দু’কূল প্রশান্ত করে দিয়ে।

আরেকবার, তোমার রাজহাঁসের সফেদ গ্রীবার মতো
গলদেশের দিকে তাকিয়ে ভাবছিলাম,
কার সাথে তুলনা চলে এই সুনিপুন সৃষ্টির।
নিজের সকল শব্দভান্ডার তন্নতন্ন করেও,
খুঁজে পাইনি কোনো যথার্থ উপমা।
শুধু মনে হচ্ছিল এক সদ্যফোটা শাদা পদ্মকলি বুঝি,
ভেসে আছে অবাধ জলের মাঝে সগৌরবে।

তারপর,
ব্যাবিলনের রানীদের বাগানের মতো, সযতনে লালিত
তোমার ভাঁজখোলা চুলের দিকে তাকিয়ে,
কুয়াশার বাষ্পে ভিজে থাকা চোখের পাপড়ি আর
খয়েরি আকিক পাথরের মতো মণির দিকে তাকিয়ে,
আমি দিশেহারার মতো খুঁজে ফিরেছি সমস্ত অভিধান,
সকল ভাষার সকল জ্ঞানকোষ।
শুধু একটি উপমার জন্য, শুধু একটি শব্দের জন্য,
লিখতে তোমার অপার্থিব সৌন্দর্য্য।
বলা বাহুল্য, খুঁজে পাইনি তেমন একটি শব্দ।

তাই, আমি আর উপমা খুঁজি না কোনো,
তোমার শরতের রোদের মতো উজ্জ্বল কিন্তু তপ্ত রূপের,
সবুজ পান্নার মতো মোলায়েম থুতনির তিলের,
ঝিরঝির বয়ে চলা ঝর্নার শব্দের মতো কথার,
অথবা গজদন্ত হাসিতে উদ্ভাসিত নির্মল মুখশ্রীর।
শুধু এইটুকুই বলতে ইচ্ছে হয়,
সকালের একমুঠো শুভ্র শিউলীর মতো,
একমুঠো স্নিগ্ধতা তুমি আমার চোখে।

(ঢাকা -  ২২-১০-২০২২)