আরেক পেয়ালা তরল অনল দাও মোরে সাকী,
আরো একবার জীবনের সুধা প্রাণ ভরে চাখি।
দ্বিতীয় প্রহরে এলো যে কেবল উৎসব যামিনী,
এখনো দেখছি নয়ন তোমার, মাতাল হইনি।
সরাও তোমার মুখের নেকাব মাথার ওড়না,
দেখাও তোমার পেলব চেহারা, হে অচেনা কন্যা।
আহ্বানের মেকি আবেশ ছড়ানো দাও সেই হাসি,
নতমুখ তুলে আমার নাগালে দাঁড়াও ষোড়শী।
ভরে দাও সকলের শূন্য পাত্র সোনালী গরলে,
সঙ্গীত লহরী বাজতে থাকুক মৃদু মন্দ তালে।
তোমাদের আবেদনে ভরে যাক এই রাত্রি আজ,
স্খলিত হউক শরীরে জড়ানো রাজকীয় সাঁজ।
আজ নিশিতে শুধু উল্লাস হবে ভুলে সব ক্লেশ,
হৃদয় মাঝে বয়ে নিক সবাই স্মৃতি অনিঃশেষ।
তোমাদের এই নগরে আমরা আসিনি সহসা,
যুদ্ধ ময়দানে প্রাণপনে লড়ে হয়েছি বিজেতা।
দীর্ঘদিনের যুদ্ধের শেষে রণ ক্লান্ত সৈন্যদল,
বিজেতার বেশে নগর তোরণে করে কোলাহল।
শোরগোল তুলে কোরাসের সুরে গায় জয়গান,
উৎসবে উৎসবে কাটুক রজনী ফুর্তি অফুরান।
সহস্র প্রাসাদ সহস্র নগরী করেছি অঙ্গার,
এগিয়েছি জয়ের মানসে সব করে চুরমার।
কঠিন প্রাচীর বিদীর্ন করেছি সুতীব্র আঘাতে,
শত্রুর তরে দয়ার চিহ্ন নেই আমাদের ধাতে।
বিজিতের মনের খবর নিতে কি বা আছে দায়,
শক্তিবলে তাদের মাঝে বিজয়ী পতাকা উড়াই।
যদি ভাব মোদের সভ্যআর্য তা কিন্তু নই মোটে,
অনার্য যোদ্ধার রক্ত আমাদের হিংস্র ধমনীতে।
ত্রাসের মত ছুটে গিয়েছি কত নগর প্রান্তরে,
মিশিয়ে দিয়েছি অসংখ্য সভ্যতা মাটির গভীরে।
তোমাদের পরাজয়ের আনন্দে চলুক উৎসব,
মনের গোপনে চাপা দিয়ে রাখো তীব্র দুঃখবোধ।
পেয়ালা পেয়ালা ভরে দাও সাকী অমৃত পরশে,
আকন্ঠ পান করুক সবে দীর্ঘ পিপাসার শেষে।
জীবনের সব আক্ষেপ ঘুচায়ে দাও আজ রাতে,
প্রভাতে হয়তো শেষ হবে প্রাণ শত্রুর আঘাতে।
(ঢাকাঃ ০১.০৮.২০২১)
মাত্রাঃ ১৮ (১২+৬)