আনমনা ভাব নিয়ে চলছিতো চলছি
পথহারা পথিকের মত, কোথায় যাচ্ছি
কেন যাচ্ছি মস্তিষ্কের অজানা!
হঠাৎ মনে হল, কে জেনো ডাকছে,
বারবার ডাকছে, আমাকে নাতো!
স্থির হয়ে দাড়ালাম, চোখমুখে তথমথ
ক্লান্তির আবাশ
--হে পথিক, কয় যাচ্ছো, এদিকেয় কি
তোমার আগমন? কিছু লাগবে তোমার!
আমি ধেরধের করে থাকিয়ে, কি বলব
চিন্তায় মগ্ন।
--আমি চলছি, আপনাকে বলতে হবে
কয় যাচ্ছি? কেন ডাকছেন এভাবে?
--তোমার লাগলে আমাকে নাও,
অত দূরে কয় যাও?
আমি আরো তথমথ হয়ে ভাবছি, কে উনি!
--কিছু লাগবেনা, আমি হাঁটছি, এক আনমনা সুরে।
কেমন জানি হাস্য হাস্য ভাব নিয়ে বলছে।
--আমি সস্তা, আমার শ্বয়ন কক্ষ আছে,
টাকাও কম, এইতো একটু দূরে।
আমি অপলক দৃষ্টিতে চেয়ে আছি, বেশ
কৌতূহল এসে ধরা দিলো, ক্লান্তি অবসর নিলো।
-তার কথা বুজতে না বুজতেই বলে বসলাম
কে আপনি?
--আমি এখানকার একজন, তোমাদের
হিংস্রতার ভোগবিলাস।
রহস্যে আমি ঢেড় চমকে গেলাম, কয় এসেছি,
আমি কখন কিভাবে এই গলিতে?
চারিপাশে কতশত মেয়ের পথচলা
কেউ হাসছে, কেউ চুল দুলিয়ে গল্প
করছে, সবাই যেনো দেখতে এক রকম,
স্বভাবটাও যেনো স্ব-ধরণ।
জানতে ইচ্ছা হল, কে এই নারী, কেন ডাকছে এত?
--আপনার নামটা কি, মানে কিছু মনে না
করলে যদি বলতেন?
হেসে হেসে কেমন একটা ভাব নিলো,
--আমার কোন নাম নেয়, একেক জনের
কাছে এক এক রকম আমি,
তুমিও একটা নাম দাও।
--জ্বি, আমি আপনার নামটা জানলে ভালো হত
কি বলে সম্বোধন করি?
--নাম ভূলে গেছি, সবাই আমাকে মাগী বলে,
কেউ কেউ মাল, এক পিস এসব ডাকে।
আমার আনমনে পথচলা, ক্লান্তি সব নিমিষেয়
মিলিয়ে গেলো, রহস্য জানতে একটু কাছে গেলাম।
--আপনি এখানে থাকেন কেন? গলিতে এত এত
মেয়ে কেন?
--এটাও জানোনা পথিক, এটা নিষিদ্ধ গলি
এখানে সবাই আসে নিজেদের বিলাসীতার
জন্য, আর আমি তাদের ভোগের একজন।
কিছুটা বুঝলাম, আমি পথ হারিয়ে এক অজানা
অচেনা গলিতে, এক রুপবতীর সামনে।
--আপনি কেনো এসেছেন, এত কাজ থাকতে,
নিজের প্রতি কোন প্রেম নেয়?
মেয়েটা টেপটেপ করে চোখের জ্বল
পেলে, আমি ঠিক দেখছিতো?.
--বছর কয়েক আগে, রাস্তা থেকে তুলে আনে,
নিষিদ্ধ গলিতে ঠায় দে, কাঁন্না করেছি অনেক,
মা কোথায় বাবা কোথায় জানিনা,
হয়তো অনেক খুজছে, জোর করে শ্বয়ন
ঘরে ঢুকিয়ে দিত, ইচ্ছা মত ভোগ করতো,
লালসার সঙ্গী ভেবে।।
--পালাতে চাননি, পালিয়ে যেতেন, বাড়িতো চিনেন?
--না না পথিক, আমি সবিয় চিনি, যাবনা আর
ফিরে, সমাজ আমায় নিবেনা, দূরছাই বলে
ছোড়ে দিবে, মা বাবাকে তাড়িয়ে দিবে,
আমি আর ফিরবনা।
--আপনার বয়স কত? খারাপ লাগেনা
বাবা মায়ের জন্য?
--এইতো চৌদ্দ হবে হয়তো, না না খারাপ
আমার সঙ্গী এখন,
বাবাকে দেখেছিলাম গত বছর, মুখ ঘুরিয়ে
চলে গেলেন তখন।
--কেউ আপনাকে নিতে চাইলো, কি করবেন ভাবুন?
--পথিক তুমি কি বলছো জানো! মালিক
জানলে গিলে খাবে দেখো।
বার বারটার শয্যা সঙ্গী আমি, যন্ত্রণার
সবিয় দে যুবক থেকে মধ্যবয়সী।
আমি ফিরতে চাই, অনেক ভাবে, পিছিয়ে
পরি পরমুহূর্তে, আমার ঠায় নেই এই সুন্দর
ভূবনে, আমি কামনা বাসনার শত পুরুষের সঙ্গী।
আমি অবাক হলাম, তাকিয়ে রইলাম মেয়েটির দিকে,
শুনছিলাম আর শুনছিলাম, কথা বলছে আর কাঁদছে,
চোখ দু'টো লাল হয়ে বিষন্নতা দেখাচ্ছে, কোথাও যেনো বলছে,
আমাকে বাঁচাও, আমাকে বাঁচাও, এই অন্ধকার রাজ্য থেকে,
আমাকে শুদ্ধ বাতাস দাও।।
ভাবছি- কেউ যদি কান পেতে দুঃখটা শুনতো!
তাদের আহাজারিতে আকাশ ভারী হয়ে উঠতো!
আমিও শুনলাম, চলে এলাম, কেউ দেখার নেই তাদের,
শুধু বলছি আর বলছি, মানছি আর মানছি,
খেলছি আর খেলছি সরলতার সুযোগে।
সবিয় নিজ গতিতে, আমিও আমার গতিতে,
সেও তার গতিতে, কেউ কারো দেখার নয়,
ভোগেয় সব, বিলাসীতায় সব, কামনা-বাসনায় সব।।
.
ক্যামাম্ ফাহিম