যখন তোর নাম ধরে কেউ ডাকতো, কেন জানি আমার ভালো লাগতো;
“রুক্কুনা” তোর অন্য নাম আমার নেই জানা। জানার দরকারও পড়েনি।
অনেক সুন্দর এ নামটা তোর। অন্তত আমার তেমনই মনে হয়।
বুঝতাম না কেন ভালো লাগতো। গালে টোল পরা চকচকে দাঁতের উপর
দাঁত উঠা নিস্পাপ হাসিটি এখনও চোখের কোনায় আটকে আছে।
আড় চোখে তাকালে পরিস্কার দেখতে পাওয়া যায়।
সবার থেকে আলাদা শোনাতো, মা-মনি যখন ডাকতো “রুক্কুনা” বলে।
বেশ অদ্ভুদ রকমের ভালো লাগতো শুনতে। মনে হতো তুই অনেক কাছের।
একটু বড় বলে সমীহ করেছিলাম কদাচিত! হা হা হা। কিন্তু তোকে ওরকম মনেই হয়নি কখনও।
কেউ বাধ্য করেছিলো বলেই হয়তো। সংসারে থাকেনা কিছু মানুষ; যাদের অনেক কিছুই সহ্য হয় না।
কিছুটা ছোট হলেও, মনে যে ছিলাম সমান। একটু বেশীও বলা যায়।
সবাই বলতো “বনানী” ছিল পিঠাপিঠি। আমারতো মনে হয় বুকা-বুকিই ছিল বেশী।
ওর গা-ঘেসা আর তোর দূরে দূরে থাকা, দু’রকম ভাবের প্রকাশ!
বলা নেই কওয়া নেই, কেমন অদ্ভুদ! চোখ আর অন্যান্য অঙ্গের ভাষা মিলিয়ে
দু’রকম অকৃত্তিম ভালোবাসার অলিখিত আহবান।
পুকুর পারে, বাগানে কিংবা বড় বাড়ির ছাদে ছিল অবাধ বিচরন।
ছিল না লজ্জা, ভয় কিংবা সংশয়। ঐ বয়সে অতসব মাথায় আসে নারে।
বুঝতেও পারিনি কখন আলাদা হয়ে গেলাম। আজকাল একা একা হাটার সময়
বুকের উত্তর কোণে এক অজানা কষ্টবোধের সৃষ্টি হয়।
বুঝতে পারিনি! শৈশবের কুঁড়িটা এমন করে ডাল-পালা ছড়াতে পারে।
অমন নি:শব্দে এগিয়ে আসা ভালোবাসা বোঝার মতো স্তরে ছিলেম না-রে।
মুখে উচ্চারিত হয়নি তোদের, বলিসনি কেউ তেমন ইশারা ইঙ্গিতে।
অমন আহবানের মানে বোঝা ভার অবোধ কিশোরের।
ছিলনা প্রেমপূর্ণ কবিতা জানা, না ছিল জানা সুর কোন সঙ্গীতে।
হৃদয়ের যতটা অঞ্চল দখলে ছিলি, এখন আরও বেড়েছে তার সীমানা।
২২টি বছর পর অনুভবে ছেয়ে গেছে পুরো পানাকৃতি। “বনানীও” চলে গেলো!
বিচ্ছিন্ন সংযোগ, সীমাহীন নাগালের বাইরে। তুই বাহুবন্দি কোন ধনাঢ্যের।
ঘুনে ধরা সেই ভাবনা ধরা দিলো ধুসর মেঘে ছেয়ে যাওয়া বিকেলে।
আজ, এতদিন, এতবছর পরে এসে, এতখানি দূরে।
KKB-27.06.2016