রবীন্দ্র চয়ন
খাতুনে জান্নাত
.....................


বৈশাখে বর্ষণ হয় দগ্ধতার দীর্ঘ অবসানে
দৈনন্দিন মায়ামৃগ হাঁটে তালে চিরায়ত প্রাণে
স্পর্শ জাগে নিবিড় সত্তায় অবশ অচৈতন্য মনে
দৃঢ় রাখে স্তম্ভ হয়ে অমলিন স্নেহ আয়োজনে


নদী, বৃক্ষ, ফুল, পাখি চির চেনা তবুও অচেনা
রক্তে বয় খরস্রোত ঐতিহ্যের অহংকারে কেনা
বাবলার বন ডাকে প্রকৃতির কোলে প্রকৃতি
কৃত্তিমান বংশ হ’য়ে পাশে থাকে অমোঘ নিয়তি


হৃদয়ে শারদ বাজে হে গুরু তোমাকে ভাবলে
নাম ধরে ডাকে কে যে প্রিয়তম শব্দের আদলে
বহদূরের গল্প বলে অনুরাগে ওপার নন্দিনী
তরণী ভিড়ায় কাছে, ভাঙে ঢেউ আলসে বন্দিনী


জ্যামিতিক দিনমান সুর হয়ে সাধক সাজাও
ঘুম ভাঙানিয়া বাঁশি অবিরত বাজাও বাজাও।

গুরু
(রবীন্দ্রনাথ স্মরণ)

ফিরে আসি
কালের চড়াই উৎরাই বোল ও বেভুল পার হয়ে
আসতেই হয়--জীবনের প্রয়োজনে
এ হৃদয় ধুয়ে ধুয়ে নৈরাজ্য-জলে
কাদামাখা মনে পার্বত্য দুর্গমতা
বঞ্চনার উদাসী বেদনা রোখে আপন আকাশ

এখানে মাতৃ-প্রাণ ছোট শিশু রতনের খোঁজে
ফটিকের ফেলে আসা গ্রাম স্তবির বেদনাবিদ্ধ
উপেনের তিনবিঘা জমি
পরবাসের বেদনায় ঢাকা মাটির পরত
মধ্যবিত্ত সাধারণ মেয়ের আত্মপ্রকাশ
কবিতার হাতে অসামান্যা, অবিনাশ
প্রেম-বিরহমাখা দ্বিধামুক্ত
গল্প-গান-কবিতার মাতোয়ারা স্রোত
মহীরুহ প্রশান্ত শাখা
জীবনে জীবনে ছড়ায় স্নিগ্ধতা, সচল দিগযাত্রা

আপনার দিকে ছুঁড়ে লক্ষভেদী তীর
বুকে তুলে নেয়া দুর্বোধ্য সমাচার.
আলগোছে দূরে রাখে মা-বোনের স্নেহের দিবস,
গ্রীষ্মপ্রখরে পিতার হাতপাখা
বাজারমুখো ভায়ের কাছে আব্দারের আদুরে সকাল
দিঘিতে অবগাহনের ক্রান্তিকাল মিশে
অরণ্যের শ্বাপদ শঙ্কায়!

অনিদ্রারোগ পুষবে কত দেওলিয়াপনা হিসাব-নিকাশ!
অর্ধ জ্ঞানতাপস কতই বা দেখাবে
মেঘলা দিনের আবছা আঁধার
প্রাণের প্রেরণা ফেরাবে কেন্দ্র অভিমুখে
ক’ফোঁটা অশ্রুসহ আপনার দিকে....