ধরণী মাতা
খাতুনে জান্নাত
...........................
হে ধরণী মাতা তুুমি বুঝিয়ে দিয়েছো মানুষকে তুমি এক ও অভিন্ন। সুখ ও অতি সুখের লালসায় মানুষ বানিয়েছে মারনাস্ত্র। পুড়িয়ে দিচ্ছে শহর, গ্রাম আর মানুষের জীবন। তেল জ্বলতে জ্বলতে পুড়ায় বাতাস; তার সাথে পুড়ছে বায়ুমন্ডল। চলছে ক্ষমতার নির্লজ্জ প্রদর্শন। ত্যাগির পথ মাড়িয়ে ভোগের সাগরে নিত্য হাবুডুবু। মানুষের মাঝে মানুষ তুলেছে বিভেদের প্রাচীর। ছোট বড়, জাত, বেজাত আর অহমিকা শৃঙ্খল। নিজেকে রক্ষা করতে গিয়ে ছিঁড়েছে অন্যের রক্ষা কবজ। জ্বলন, দহন, পীড়ন, প্রতারণা, বিভেদ আর অবক্ষয়। স্বার্থ আর স্বার্থের দ্বন্দ্বে বিভোর মানুষ ভাবেই নি ছিঁড়ে যাচ্ছে, ক্ষয়ে যাচ্ছে ভিত্তি, নেমে পড়ছে ছাদ। হাজার ধর্মের মতের বিভেদে বিভাজ্য মানুষের অন্তর। উন্মাদনায় মিথ্যে আর ক্ষমার অযোগ্য মানুষের অজ্ঞতা হানিকর বর্বরতা। অহংকার আর অহংকারীর পদাঘাতে পিষ্ট নিরীহজনের শ্রমের ফসল। তাই কী অভিমানী জননী শুধরে নিচ্ছো তোমার পথরেখা। প্রলয়ের মহা প্রতাপে কম্পমান। তবে কী এবার তোমার পৃষ্ঠের মানুষ এক হবে! সুখ-দুঃখ, ভালো-মন্দ, বিজয় ও পরাজয়ে ভাগ করে নেবে আনন্দ ও নিরানন্দের সকল প্রহর। শ্রমিকের, কৃষকের শ্রমের ঘাম নিয়ে হোলিখেলায় মত্ত হবে না কাচঘরের মদের আসর। সুউচ্চ অট্টালিকার ছায়ায় গৃহহীনেরা করবেনা দিনাতিপাত। দলিত নারীকে পন্য করে তুলবে না ধর্ম ও রাষ্ট্রের রোষানল! ভালো মানুষ সাজার সঙ্গে বুদ্ধিজীবিরা দাবড়ে বেড়াবে না রাজনীতির ঝকঝকে মঞ্চ আর কবিরা বিক্রি করবে না কবিতা ও মনন মঞ্চে ও উপমঞ্চে! তবে শোধন ই হোক। বিষে বিষ ঝরে যাক। আত্মার নির্মলতায় পরিশুদ্ধ হোক মানব হৃদয়। ধরণী মাতাও ফেলো নির্মল শ্বাস।