অভিমান
(দেশ ছেড়েছে যারা রায়টের রোষানলে)
যেদিন আসতে হয় ফেলে
জীবন-জীবন সংগ্রাম তল্পিতল্পা সহ;
বুকের কান্নায় মিশিয়ে পড়শীর অশ্রুজল
পাড়ি দেয়া অজানা পথের দিকে—
তখনও বন বীথিকার ঝোপে
লাল-পিঁপড়ারা ডিম-মুখে আবাস অভিমুখে—
সন্ধ্যার য্যাম পার হলে ঘাম সরিয়ে আয়েশ করে শোয় বাড়ির কুকুর
ফেলে আসা স্বদেশ—
আমার কৈশোর শূন্যতায় তুমি কি রেখেছো
একবিন্দু শিশির-অভিমান।
বুকে বেজে ওঠা বৈশাখী দামামা
যৌবনের উদীয়মান পথে তোলে ধূলি ঝড়;
মুখ্য সে আঁধারে জাগিয়েছ কি না
কৈলাস পাড়ার শীত ভাঙা রোদেলা সকাল!
আমি তো পাই না সংগ্রামী সুতোর মসলিনে মসৃণ বাখান।
রুদ্ধ করে জন্মভিটি— বাঁশের খিলানে টাকার টুংটাং
বিদ্ধ করে পাঠশালা মাঠ—প্রতিযোগী ঘুড়ির বিকেল
অশ্রুসিক্ত করে রবিবার বাজার— প্রিয়-পরিচিত আলিঙ্গন।
প্রিয় মাতৃভূমি
ফিরিয়ে দাও—হাতে-হাত ধরা নদীমুখী আল পথ—
ফিরিয়ে দাও—বসন্ত-বাতাসে আম-মুকুলের থৈ থৈ উৎসব—
শৈবাল দিঘি ঘাট—পা’র পাতা-ডোবা নির্জন দুপুর—
বাসক পাতার জ্যোতি—ধ্যানমগ্ন শ্মশান-বিতান—
উর্বরা জন্মদাত্রী—
কত আর ভগ্নতা, কত কালের উন্মত্ততা!
এবার জন্ম দাও প্রেম
প্রেমের অঙ্কুরিত মানব ফসল...