আলোকরেখা
তোমাকে খুঁজেছি কত তৃষ্ণায়-তৃষ্ণায়!
নিরন্তর নৈমিত্তিকতা
অন্বেষার অমনিবাস
কাঁটা-গুল্ম-লতিকা পথে আটকে পড়ে থাকে।
দুর্বলের রক্তস্রােত জমা সবলের অস্ত্রের বাগাড়
স্বার্থ-দ্বন্ধ আর দণ্ড নীরিহজনের নিমিত্ত
তার সাথে মিশে থাকে সাম্রাজ্যসীমা পার হওয়া মানুষের মুক্তির মিছিল...
যুগ-যুগ ঐতিহ্যের অহংকার,
পার্বণিক সংক্রান্তি-সুষমা
নিয়নবাতি নয়ত জোনাকির প্রোজ্জ্বল্যমানতা;
পৌষের প্রান্তে ধানকাটার পর
গ্রামের প্রান্তরে উল্লাসতোলা দাঁড়িয়াবান্দা
সাথে অনাবাদী জমির নিঃশ্বাস...
কখনো এখানে ছিল খোলামাঠ
উড়ে চলা বাতাসের খোলা-চুল
সনাতন রক্তের দাগ, ছিন্নভিন্ন পায়ের পাতা;
শরীরে আগুন মেখে ডোম্বী রমণী
চুপিচুপি ডুব দেয় কুয়াশায়-
তার শরীরের প্রতিটি শিশিরের জলকণা
ঘাসের শিকড় মাখে অসমাপ্ত পরিক্রমনিকা...
প্রতিদিন ঘর্মাক্ত সেলাই মেয়েরা,
পারিশ্রমিক হীন শ্রম ও ঠকাঠকির আখড়া,
মানহানি করা সমাজের কোষ থেকে কোষ খুলে
পেতে পেতেও হারাই তোমাকে...
পাহাড়ের পাদদেশে ঝর্ণার উদ্দামতা
তারপর নদী--
ছুটে চলা ঘাম, রক্ত, পুঁজ, বিষাদ ও বিবমিষার কাদা-
সাগরের বুকে জমানো জমিন;
সাগরের বুক বুঝি ফুলে যায়!
দুরারোগ্য রোগিণীর শ্বাস,
মাঝ পথে থেমে যাওয়া শব্দের অনুপ্রাস নিয়ে বাড়ে জল;
বাড়ন্ত দুঃখের সাথে মিশে তপ্ত দুপুরবেলা...
তুমি হারিয়েছো হয়ত বা লুকিয়ে পড়েছো
লুকোচুরি করা ভোর ও বিকেলের পাশে বিরহী বকুলতলা।
আশার হিরক কণা আর পান্থজনের কথকতা।
পাখিরা গোধূলি পেলে সন্ধ্যা হয়-
ঘর পেরিয়ে নির্বাণের সুতো
অবাক তাকিয়ে থাকে রাতের আলয়।
আমরা ঘুমিয়ে পড়ি-- কথা কয় গোপনতা-
প্রেম-ঘৃণা মিশ্রিত দহন ব’য়ে
বেশ্যার আশ্রম থেকে বের হয় ব্যর্থ প্রেমিক।
ক্ষয়ে যাওয়া জ্যোৎস্না ও পার্থিব পথের ধারে স্তব্ধতার চর;
রাতের রজ্জুতে সাংসারিক মিলনের পর
সম্পর্কের আড়ালে গুপ্ত সূক্ষ্ণ প্রতিযোগিতা-
অতৃপ্ততার আঁচড়ে নিয়মিত দেয়াল লিখন;
এভাবেই কাটে প্রতীক্ষিত জনম জনম...