'স্বাধীনতা' নামক সাড়ে চার অক্ষরের শব্দটিকে
অনেক খুঁজেছি আমি, আ-সমুদ্র-হিমাচলে!
সভ্যতার পরতে পরতে রক্তের দাগ দেখে দেখে
অনেক খুঁজেছি আমি সমুদ্রের অথৈ জলে
নীড়ভাঙা ঝড়ের গর্জনে, পাহাড়ের চাপা কান্নায়
কখনো বা আদিগন্ত আকাশের নীলে!
'স্বাধীনতা' নামক সাড়ে চার অক্ষরের এই শব্দটির জন্য
অ-নে-ক হেঁটেছি আমি, বেদুইনদের সাথে
উটের কাফেলা নিয়ে তপ্ত মরুপথে;
কখনো বা প্রিন্স্ অব্ ওয়েলসে ভেসেছি নিস্তব্ধ রাতে
'মদিনা সনদ' থেকে 'ম্যাগনা কার্টা'!
'বিল অব রাইটস' থেকে 'অ্যটলান্টিক চার্টার'!
রুশো থেকে লিঙ্কন, গান্ধী, ম্যান্ডেলা কিংবা লুথার,
চেঙ্গিস্ খান থেকে স্তালিন, মুসোলিনি, হিটলার,
কখনো ক্যালিগুলা অথবা ভ্লাদ, দ্যা ইমপ্যালার
সবার হাত ধরে ধরেই হেঁটেছি আমি অ-নে-ক বার!
'স্বাধীনতা' নামক সাড়ে চার অক্ষরের এই শব্দটি
কখনো গুমরে মরেছে বাবার রক্তচক্ষু শাসনে
কখনো প্রিয়ার হাত ধরে হাওয়ায় উড়েছে
কৈশোরের রাতে, খসে পড়া নক্ষত্রের পানে।
কখনো বা যৌবনের প্রাণোচ্ছল গানে কতবার
খুঁজেছি আমি সাড়ে চার অক্ষর এই শব্দটির মানে!
হিংস্র বাহুবল আর প্রতিহিংসার অনলে অতঃপর
খুঁজে পেয়েছি আমি তারে, অসহায় রক্ত ঝরঝর
মুমুর্ষু আশ্রয়হীন পড়ে আছে মধ্যযুগীয় বর্বরতায়!
একটু খুলে বললেই যার মানেটা দাঁড়ায় ----
স্বাধীনতার শত্তরোর্ধ বার্ধক্য যাত্রায়
ধর্মের ফরমালিনে জারিত হয় ভোটাধিকার,
উদ্ভট গন্ধে সুশীল সমাজ সরে যায় দূরে
শেয়াল কুকুর আর হায়েনারা ছুটে আসে
পঁচা মাংসের লোভে, ভন ভন মাছির চক্করে,
জাতপাতের নিরিখে বেজন্মারাই আজ সিদ্ধান্ত দেবে
সুশীল সমাজ কে কি খাবে, কে কোন দেশে যাবে!
অথবা কে কয়টি সন্তানের জন্ম দেবে!
ধর্মের জিগির তুলে, চারদিকে নরমেধ যজ্ঞের আগুন
জ্বেলে কাপালিকেরাই আজ বলে দেবে কানে কানে
সাড়ে চার অক্ষর এই শব্দটির অনুপুঙ্খ মানে!'
------ খছরুজ্জামান্।