ভুলে গেছি
-----
সেই কবে আমি মানুষ ছিলাম
একটি অতি প্রাচীন অন্বেষণে আমি
একদিনতো মানুষ ছিলাম,
যে আলোয় হত জগৎ উদ্ভাসিত
ছড়িয়ে ছড়িয়ে আলোকিত হত চারটি দিক
আলো থেকে আলো,আলো থেকে অগ্নি-
অগ্নি হয়েছিল প্রজ্জ্বলন।
অগ্নি পুড়ে ছাই করে দিয়েছিল,ছাই তবু এর ক্ষয় নেই,
আকাশে বাতাসে উড়ন্ত, ছড়িয়ে পড়েছিল সমস্ত ব্রহ্মান্ড জুড়ে।

আগুন ছড়িয়ে প্রদীপ্ত হয়েছিল আমার মন,
আমি জগৎ জুড়ে দেখেছিলাম আলো
আমায় রসদ দিয়েছিল,আমার অস্তিত্বে দিয়েছিল বল,
আমি অগ্নিকুণ্ডে বসে শুনতে চেয়েছি শ্যামের বাঁশি
তারপর আমার ক্ষয়ের পালা,
বাহিরের তীব্র কষাঘাত,উত্তপ্ত বালুকণা নির্মম বড়
কেড়ে নিয়েছে আমার আলো সব,
দিয়েছে অনন্ত নরকের তীব্র অগ্নিজ্বালা।

আমি কখন হয়ে গেছি একটি চাতক
নয়তো তৃষার্ত কাক
অনেক অনেক উত্তাপ বহুদিন ধরে আমায়
পরিণত করেছে মৃত কয়লার স্তুপে
আমি এখন কখনও শীতের পাখি হয়ে উত্তাপ খুঁজি
কখনও তাপ নিবারণে দেই হিম বরফে সাঁতার
আমি এখন বিবর্ণ ঘাসের মত,
আমি এখন বজ্রপাতে আহত পাখির মত,
আমার অবয়ব জুড়ে শুধুই ক্ষয়ের চিহ্ন।

আমি ভুলে গেছি শেষ কবে হাস্নাহেনার ঘ্রাণে
তোমার সাথে দেখেছিলাম রূপালী চাঁদ
ভুলে গেছি শেষ কবে ছুঁয়েছিলাম বৃষ্টির জল,
ভুলে গেছি কবে তোমার সাথে যেতে যেতে
গেয়েছিলাম গান পাখিদের সাথে
কবেই ভুলে গেছি সেই পথের চিহ্ন
জেনে কিংবা না জেনে
বুঝে কিংবা না বুঝে
অমিয় ভেবে করেছি গরল পান।

সব সুর থেমে গেছে ওই সময়ের কাছে,
জীবনের আলো নিভে গেছে ওই সময়ের কাছে
শেষ কবে দেখেছিলাম সূর্যোদয় অথবা সূর্যাস্ত
সব ভুলে গেছি
শুধু মাঝে মাঝে আনমনে ভাবি, কবে আমি মানুষ ছিলাম,
আমি কি আসলেই কখনও মানুষ ছিলাম?
নাকি ছিলাম কেবল সময়ের একটি ক্রীড়নক?
১/১১/১৮