অচেনা শহর
---
এই শহর তবু হয় না আমার
       বাস্তুভিটায় ঘুঘু চড়িয়ে
           নিয়েছি ঠাঁই, সুউচ্চ পায়রার খোপে;
সুখ যত কিনে নিতে
করেছি মরণপণ যুদ্ধ।
        জল কিনেছি, বাতাস কিনেছি,
           এখন বাঁচার জন্য হরদম কিনি
              সুদৃশ্য মোড়কে বেঁচে থাকার রসদ,
চড়ামূল্যে স্বাতন্ত্র্য দিয়েছি বিসর্জন
তবু এ শহর আমায় ভাবে না আপন।
        নিছক তুচ্ছ ভেবে অনায়াসে করেছি ত্যাগ
               অথই জলের আধার, প্রবাহিত সমীরণ,
                     নাড়ীপোঁতা মাটির সংযোগ চ্ছিন্ন করেছি।
নগরবাসী হতে গিয়ে আঁটি ফেলে
একলা কাঠির মত কাটাই সোনালী সময়।
          তবু মন ভুল করে, বার বার করি ভুল,
                 নতুনের আশ্বাসে ভুলি পুরনো সব
                      পথরেখা এঁকে যাই ভুল করে ভুল পথে।
শুরু থেকে হয় শেষ
তাই নতুন থাকে না নতুন,
            নতুন হয় পুরাতন, নতুন নতুন এসে বিব্রত করে।
                    কত আর ছুটাছুটি, ক্ষয় হয় প্রাণ,
                         পুরনো জলে ঢাকা দ্বীপে জেগে ওঠে চর।
এভাবেই হয়ে যাই জীর্ণ, পুরনো,
পুরনো বইয়ের মলাটের মত।
          এত কাছাকাছি, তবু নির্লিপ্ত উদাসীনতা
               কিংবা ব্যস্ততায় হয়ে যাই চির অচেনা,
                    মুখোশে ঢাকা মুখে থাকে দুর্বোধ্য চিহ্ন।
হাতছানি দিয়ে ডাকে স্মৃতি,
সঞ্জীবনীর ধুলোমাটি, সবুজ ঘাস,
          শ্যাওলা ধরা ঘাট পারে ছায়া ঢাকা পুকুর,
                ছাই ভেবে উড়িয়ে দিয়েছি কারে কবে,
                     জীবন ছিল ইচ্ছে ঘুড়ির মত, আপন খেয়ালে
উড়ে বেড়ানোর মুক্ত পাখির জীবন -
কোথায় সে দিন, স্বেচ্ছায় দিয়েছি বিসর্জন।
            মেকি আয়োজনে প্রয়োজন মিটে কোনমতে,
                   কখনও হয় না নির্ভরতার, এ শহর তাই হয় না আপন,
                        আরোপিত আয়োজনে তাই থাকে দীর্ঘশ্বাস।
দম বন্ধ হয়ে আসে,
    বন্দী বাতাস নিঃশেষ হয়,
        দম বন্ধ, ঝিম ধরা বন্দী সময়।
২৮/৬/২০