মৃত্তিকা আমার
----
সেই কবে থেকে খুঁজেছিলাম একটি ঠিকানা?
কবে থেকে নিতে চেয়েছিলাম নিশ্চিন্তে
জীবনের নির্যাসটুকু?
সময় শুধু দিয়ে গেছে ফাঁকি,
কুটিল অন্ধকারে করেছে আত্মগোপন
অজস্র সম্ভাবনা আর স্বপ্নের সিঁড়িগুলো।
প্রচণ্ড খরায় চৈত্রের দুপুরে চৌচির হয় কর্ষিত জমি,
দুর্দান্ত প্রতাপে খড়গ হস্তে ক্ষেপা নৃত্যে উন্মাতাল নাগিনী
অবশিষ্ট আর নেই যেন কোনও অক্ষয় কোথাও,
গর্জনে কাঁপায় অন্তরাত্মা, ভয়ে বিহবল জনপদ অরণ্যানী
পড়েছিলো আস্থা বিশ্বাসহীনতার জটিল আবর্তে,
ক্ষোভ আর ক্রোধে চক্ষু আনত, রক্তচক্ষুর নির্লজ্জ্ব আগ্রাসনে।
সমস্ত প্রকৃতি শব্দহীন,সমস্ত মানুষ ছিলো অনুভূতিহীন
দিন গেছে ত্রস্ত তবু কি নির্বিকার সব অপ্রকাশিত ব্যথাভার,
সচকিত কর্ণ ছিলো তো আকুল প্রতীক্ষায়
অতঃপর আগমন হলো দুরন্ত পথিকের
জটিল হিসেবের বিষম গরমিল খাতা
সবেগে আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপিত।
একটি ধ্বনির প্রতিধ্বনি ছড়িয়ে ছড়িয়ে অগ্নি ছড়ায়,
কাল রূপান্তরিত মহাকালে,মানুষ রূপান্তরিত মহাপুরুষে
অতঃপর মহাকাল স্বাক্ষী থাকে অজস্র রক্তগঙ্গার
ওরা আসে নগ্ন পায়ে,পুষ্পরাজি পক্ষীকূল আর মৃত্তিকা
এবং সমস্ত চরাচর স্বেচ্ছায় সঙ্গী হয়,
সঙ্গী হয় নদীর জল আর প্রভাতের আলো
রাতের অন্ধকার আর ধলপ্রহরের চাঁদটাও বাড়িয়ে দেয় হাত।
অজস্র অশ্রুবিন্দু আর রক্তকণা নিমেষে বন্ধু হয়,
প্রাণের জোয়ারে ভাসায় কঠিন বাঁধের অটুট বাঁধন
এখানে ওখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা রক্তবিন্দু হাসে
ধানের শীষে,দোয়েলের শিসে, একটি শাপলায় হাসে তাঁরা,
জীবন দিয়ে দিয়ে যায় সতেজ জীবনের অপূর্ব আশ্বাসে,
আর কেমন শান্তিতে ঘুমায় প্রাণের ভূমিতে।
সুজলা,সুফলা অপরূপ ভূমি ভালোবাসায় হাসে,
হাসে ভোরের মিঠে রোদ আর আসন্ন শিশু মাতৃজঠরে,
এবার প্রবাহিত নির্মল বায়ু,আর স্বপ্নেরা প্রকাশিত।
সূর্যেরা নেমে আসে, নেমে আসে মৃত্তিকায়
মৃত্তিকা হাসে অনন্য প্রাপ্তিতে,
হাসে মুক্ত মানুষেরা,অজস্র শপথ আজ সঙ্গী নির্ভয়ে,
তবে আর দ্বিধা কেনো?ঠিকানা মিলেছে,
চলো আজ মিলেমিশে গড়ি একটি সোনার ঘর,
যে ঘরে আমাদের ভবিষ্যত সগৌরবে করবে বসবাস।
১২/১২/১৮