মরা অন্তর
--
রাতের উঠোনে গন্ধ ছিল,
রজনীগন্ধা নাকি হাসনুহানা!
উঠোনের একপাশে চাঁদ
মাটির উনুনে ধোঁয়া উঠা চায়ের বাসন,
ঝিরঝিরে কিছু হাওয়া
সবকিছু এমনই স্বপ্নের মতন।

আলপথে জোনাকির দীপ জ্বালা
মাটির কুঁড়েঘরে নিভু নিভু দীপাধার
তবুও কোথাও আঁধার নেই
পবিত্র আলোয় ঝলমল দূরবর্তী পুর
অন্তরে মোমের আলোর মতন সুখ।

পুকুরে জলের হিল্লোল খেলে বাতাসে
জলের নুপুর যেন বাজে জলের সায়রে
কিছু কিছু জলের প্রাণী নির্ভয়ে
খুঁজে ফেরে পাড়ে হয়তো কিছু সুখ
যে চাঁদ জলে হাসে, কথা তো তারই সাথে।

বেলাশেষে আঁচল পেতে উঠোনে
কত যে গল্পকথার আসর
চুপিচুপি স্বর্গ নেমে আসে ভূতলে
এ পাড়ার ও পাড়ার কতজন আসর জমায়
কিছুটা যদিও অপূর্ণ সব, তবু তৃপ্তমনে
চলে আদানপ্রদান, ভাবের, অনুরাগের।

মনে মনে চলে মন উড়িয়ে পঙ্খীরাজ
দেহ পড়ে থাকে কোণে
মনের নেই যে শিকল,
নিমেষেই তুলে এনে যেখানে যা কিছু অমূল্য
অকাতরে দান করে পরস্পরে
নেই দোষারোপ, নেই কলহ
এমনই এই স্বর্গের উদ্যান।

কিছু সুর কিছু কথা ধ্বনিত হয়
দিবালোকে স্পষ্ট হয় সুরের ইঙ্গিত
অজস্র ধুম্রজাল যদিও রচিত হয়
মানুষের মিছিল জনারণ্যে মিশে
ক্রমশ দলে দলে তাঁরা বিচ্ছিন্ন হয়ে
ভিন্ন ভিন্ন উপত্যকা খুঁজে,
বিচ্ছিন্ন কিছু সুখ মেলে, বাকিটা সংশয়ে।

প্রান্তর জুড়ে বিভক্তির গন্ধ
গন্ধ ছড়ায় বাতাসে, আকাশে
প্রকৃতি কাঁদে বিয়োগব্যথায়,
যা কিছু ছিল একত্রিত, প্রেমসিক্ত
করুণরাগে সুর খেলে যায়
মুকবধির সব, শুনে না আর্তনাদ
ভারী কিছু চাপা পড়ে মরে গেছে অন্তর সব।
২৯/৩/২৫