মন খারাপের বেলায়
--
অশ্বত্থ বৃক্ষ আমায় ডেকেছিল-
"রুবি! মন খারাপ!"
আমি অবাক বিস্ময়ে তাকাই।
গাছটা আমার মনের কথা পড়ল কী করে!
"এখানে এস, এই ছায়াতলে"
আমি দেখি ঘন সবুজ বেষ্টনী,
বিশাল মহীরুহ, দাঁড়িয়ে আছে,
প্রাণ ভরে শ্বাস নিতে পারি।
আচ্ছা! গাছটা বুঝল কী করে
মন খারাপের কথা!.
সেকি মন পড়তে জানে!
আমার লাল জামাটা হঠাৎ হাওয়ায় উড়ে গেল।
কই গেল? আমি খুঁজে পাইনি আর।
ছোট ভাই আমার বইয়ের পাতা ছিঁড়ে দিয়েছে,
মা আমায় বকে দিল।
আমার পায়ে কাঁটা ফুটল,
সে খবর কেউ রেখেছে!.
এই এত এত দুঃখ নিয়ে
আমি মাঠের কাছে এসেছি
সব কথা বলব তাই।
মাঠ আমার চোখ দুটো অনেক দূরে
তাড়িয়ে নিয়ে গেল,
আমি দুঃখ ভুলে গিয়ে মাঠের আকাশ দেখি।
এমনি সময় অশ্বত্থ আমায় ডেকে নিল কাছে।
তার গায়ে অনেক পুরনো কালের গন্ধ,
ঠিক আমার দাদার পালঙ্কের মত
যা বংশ পরম্পরায় দাদা পেয়েছিল,
তারপর বাবার হাত ধরে আমি।
"রুবি! বসে পড়, আমার ছায়াতলে".
গাছ কথা বলতে জানে বটে।
আমাদের অনেক গল্প হল,
আমি দেখলাম নিষ্ঠুর ক্ষতচিহ্ন,
সে আমায় দেখাতে চায়নি,
আমি নিজেই দেখে নিলাম।
যখন যার ইচ্ছে তার অংশ কেটে নিয়ে যায়।
বিশাল গাছটার দেহ বেয়ে টপটপে জল গড়ায়।
যার পৃথিবী যত বড়, তার দুঃখগুলোও তত বড়ই হয়,
লাল জামা! লাগবে না আমার।
ছেঁড়া পাতায় লেখা তো ছিল না কিছু,
পায়ের কাঁটা বের হয়ে গেছে কখন!
বাতাস বইতে থাকে, আমার প্রাণে দেয় শীতল পরশ।
আমার মাথায় আশির্বাদ ঝরে পড়ে যেন,
যদি কষ্ট পাও তবে মানুষের কাছে যেও না,
চলে এস সবুজের কাছাকাছি।
মাঠের সবুজ,ঘাসের সবুজ, সবুজ বৃক্ষের সবুজ পত্র
নিমেষেই কষ্ট ভোলায়
আকাশটা তো থাকেই পাশে
বিশাল কিছু ঢেকে দেয় ক্ষুদ্র অনেককিছু।
দুঃখ আর থাকে না,
শুভ্রমেঘের পালকে ভেসে আসে সুখ,
কেবলই সুখের অনুভবে মন ভরে যায়।
১১/৭/২০