অরণ্যের গভীরতা যেন এক আদিম রহস্য।
সেই গহন ছায়ার চাঁদরে প্রোথিত প্রতিটি বৃক্ষ,
প্রতিটি লতা-পাতা এক অনন্ত ইতিহাসের সাক্ষী। মহীরুহের শাখা-প্রশাখার জটিল জট,
যেন প্রকৃতির অঙ্কিত এক বিমূর্ত চিত্রকর্ম।
শাল, সেগুন, গর্জনের ছায়ায় আবৃত মাটি যেন,
যুগ-যুগান্তরের গোপন কথোপকথনের আধার।

পাহাড়ের কঠোর শৈলচূড়ায় সূর্যের রক্তিম আভা ছুঁইয়ে যায়,
যেমন বর্ণহীন জীবনকেও কখনো কখনো স্পর্শ করে আনন্দের এক ক্ষণস্থায়ী আলো।
পাথরের গায়ে খোদাই করা সময়ের ছাপ,
নদীর উচ্ছল কলতানে মিশে যায় গভীর নির্জনতার সুর।

মেঘের নরম আস্তরণে ঢেকে থাকা আকাশ যেন প্রকৃতির এক অলিখিত কবিতা।
সেই মেঘ মাঝে মাঝে ঝরে পড়ে বৃষ্টির ফোঁটায়,
যা মৃতপ্রায় মাটিকে করে তোলে উর্বর।
ঝড়ের প্রতিধ্বনি যখন জঙ্গলের নীরবতাকে চূর্ণ করে, তখন প্রকৃতি যেন নিজের শক্তির মহিমা ঘোষণা করে।

প্রকৃতির এই নৈঃশব্দ্য, এই কঠোরতা এবং কোমলতার যুগলবন্দি মনে করিয়ে দেয় জীবনের গভীরতা।
আমরা ক্ষণস্থায়ী, কিন্তু এই অনন্ত প্রকৃতি,
তার দুঃসাহসিক সৌন্দর্য, অবিনশ্বর।

---ইতিকথা