জগদীশ,
কোথায় আছিস কেমন আছিস?
বলতো এই কি মানব জন্ম!
তবে আমরা কি সবাই জন্মান্ধ?
ট্রেন আসে
ট্রেন যায়,
ডাস্টবিন থেকে
পথ শিশু খায়!
আচ্ছা বলতো এমন জন্মের
কোন মানে হয়?
বিড়াল কুকুরও এর চেয়ে
ঢের ভাল নয়!
রাত আসে
দিন যায়,
নোংরা ফুটপাতে
ক্ষুধার্ত মানুষ ঘুমায়!
জগদীশ,
তুই একে কি বলবি?
এ কেমন অদ্ভুত জন্মের ধর্ম,
মানুষে মানুষে জন্মান্তরে
কেন এত অসাম্য?
জগদীশ
তুই জানিস; আজকাল কেন জানি
আমার মানব জন্মটাকেই আজন্ম
পাপ বলে মনে হয়।
তবে কি পাপের প্রায়শ্চিত্তেই
পৃথিবী এমন উত্তপ্ত ; অমাবশ্যা ঘোর
অন্ধ প্রকোষ্ঠ কারাগার হয়?
জগদীশ,
তুই বলতে পারিস!
মানষে মানুষে ধর্মে ধর্মে বর্ণে বর্ণে,
ধনী দরিদ্রে কেন এত ভেদাভেদ;
কেন এত অসাম্য হয়?
জগদীশ,
কি জানি হয়ত ভুলেই গেছিস,
কত রাত দু'জনে জোনাক জ্বলা......
থাক ওসব কথা। তুই কি
সত্যি সত্যি জন্মান্তরের
বাঁধন কেটে শুভ্র মেঘের কোলে
হংস বলাকা হয়ে লুকিয়ে আছিস?
কি জানি কী! তবে অমন জীর্ণ শীর্ণ
নোনাধরা পলেস্তরা খসা
নিষিদ্ধ নন্দিত নরক নষ্ট নীড়ে
না ফিরে বেশ করেছিস।
জগদীশ,
যদি পারিস শুধু আমার জন্য;
শুধু আমার জন্য ফের তুই আরেকবার
স্বয়ং জীবনানন্দ, নয়ত ধানশালিক
ঘাস ফড়িং হয়ে তুরাগ নদীর তীরে
একবার আসিস। আমি শঙ্খ নীল
কারাগারের শিকল ভেঙ্গে ; তিমির রজনী
দুঃসহ যন্ত্রনার স্মৃতি জ্বালিয়ে পুড়িয়ে
তোর, শুধু তোর অপেক্ষায় থাকবো।
দেখবি তুরাগের বুকে উড়া
মুক্ত শঙ্খ চিল।
জগদীশ,
আজ রাখি; ভাল থাকিস।
ইতি-
নন্দিত নরকের ক্লান্ত পথিক।
ঢাকা
২৯.০৪.২০২১
*********************************
কবিতাটি উৎসর্গ করা হলো বাংলা কবিতা আসরের সম্মানিত কবি ও ওপার বাংলার আমার প্রিয় কবিদের একজন -" কবি জগদীশ মন্ডল" কে।
যাকে আমার ভীষণ অভিমানী কবি বলে মনে হয়েছে। যার ছবি আজও দেখতে পারিনি। কবির অনুমতি ছাড়াই তাঁর নামটা কবিতায় নিয়েছি।