জনাব,
বিগত ১৮/০৯/১৪ আমি আলোচনা সভায় '
প্রসঙ্গ গণজাগরণ' নিয়ে একটি মতামত ভিত্তিক লেখা প্রদান করেছি। লক্ষ্য করলাম লেখাটি অপসারণ করা হয়েছে।
সম্মানিত একজন কবি এটাকে 'রাজনৈতিক লেখা' হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। একজন ব্লগার হিসেবে একটি স্বনামধন্য ব্লগে ব্লগারদের অকুতোভয় আন্দোলনের সমর্থনে যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবী নিয়ে লেখাটি লিখেছিলাম। আমার বোধগম্য নয় যে কিভাবে লেখাটি তথাকথিত রাজনৈতিক লেখা হয়।
অ্যাডমিন লেখাটি ব্যান করার আগে আমাকে সতর্কতা স্বরূপ ইমেইল প্রদান করতে পারতো, অথচ সেটা করা হয়নি। একটা বিষয় লক্ষণীয় যে এই সাইটে অনেক রাজনৈতিক কবিতাও রয়েছে। এমনকি এর আগে আমি যে কয়টি কবিতা প্রদান করেছি তার অধিকাংশই রাজনৈতিক কবিতা। অথচ সেইগুলো অপসারণ করা হয়নি। লক্ষ্য করলে দেখা যাবে যে আমি কিন্তু কোনো প্রতিক্রিয়াশীল রাজনৈতিক দলের সমর্থনে কিছু লিখিনি। সময়ের দাবী নিয়ে এই ইস্যুটি এখন জনমনে প্রতিফলিত হচ্ছে সেটিকেই ব্যাখ্যা করেছি।
লেখাটিকে হয়তো যদি কাব্যিক ঢঙ্গে লিখে কবিতা আকারে প্রকাশ করতাম তবে হয়তো সেটি অপসারিত হতো না।
আমার লেখাটির অপ্রাসঙ্গিকতা বিচার করে মতামত দিলে আমার জন্য বিষয়টি স্পষ্ট হবে। সাইদিকে ফাঁসি না দেয়ার প্রতিবাদেও এই ওয়েবসাইটে অনেক কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। আমার লেখাটি রাজনৈতিক হলে ঐ কবিতাগুলোও রাজনৈতিক লেখার পরিচয় বহন করে।
কবিতা তো স্রেফ মেনীমুখো তরল প্রেমের শব্দাবলী নয়।
আমি বিশ্বাস করি, এখানকার কবি সমাজ প্রগতিশীল। তাই আমার লেখাটিতে কারো কোনো স্বার্থেও আঘাত লাগার কথা নয়। আলোচনা তো সমসাময়িক ইস্যুতে প্রতিবাদ নিয়েও হতে পারে। অথচ লেখাটির এই অপসারণটি আমার কাছে লৈখিক স্বাধীনতার হরণ হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছে।
আমি অ্যাডমিনের জ্ঞাতার্থে পুরো লেখাটি এখানে আমার প্রকাশ করছি এবং অ্যাডমিনের সুবিবেচনাপ্রসূত নির্দেশনা কামনা করছি।
ধন্যবাদ।
(কৌশিক আজাদ প্রণয়)
ব্যান করা লেখাটি নিম্নরূপ
প্রসঙ্গ গণজাগরণ
- কৌশিক আজাদ প্রণয়
'কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবী নিয়ে শাহবাগ মোড়ে রচিত হলো বাংলার ইতিহাসের এক অনন্য অধ্যায়। সকল বয়সের সকল পেশার মানুষ একত্রিত হয়ে অভিন্ন চেতনার জন্ম দিলো 'যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি চাই' । জনতার আন্দলনে রায়ের পরিবর্তন হলো। প্রজন্ম একাত্তরের চেতনায় যোগ হলো নতুন আত্মবিশ্বাস। অভিন্ন ব্রত নিয়ে আবার অগ্রযাত্রা বিপ্লবের পথে। আর কোনো যুদ্ধাপরাধীর গাড়িতে জাতীয় পতাকা শোভিত হয়ে পতাকার মান হরণ হবে না। জামায়াতে ইসলামের রাজনীতি তথা ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়ার আন্দলনে এগিয়ে গেলাম আমরা। ধর্মনিরপেক্ষ দেশে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি আমাদের সংবিধানের চরিত্রের সাথে বেমানান। অথচ, হুট করেই যুদ্ধাপরাধ ইস্যুটা যতটানা সময়ের দাবী তার চেয়ে বেশী রাজনৈতিক দাবারগুটি হয়ে গেলো। বয়স বিচারে গোলাম আজমকে ফাঁসি দেয়া হলো না, সাইদির মতো কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধীরা জনগণের ট্যাক্স এ ভোগ করবে ভিআইপি শেল। আর যাদের নিরন্তর সংগ্রামের পড়ে আজকের এই অবস্থান সেই গণজাগরণ মঞ্চে পুলিশের জলকামান, লাঠিচার্জ।বুলেটের ভয় দেখিয়ে নির্বাণ করে দেয়া হয় গণজাগরণের উত্তাপ। আর লেজুড়বৃত্তিক কিছু সংগঠন জুড়ে দিয়ে কলঙ্কিত করা হয় গণজাগরণের প্রকৃত চেতনা।
আজ সহ রবিবার পুরো দেশে জামায়াতের আঁতাতময় হরতাল আইওয়াশ। কি জানি, সামনে যেই অপরাধীদের বিচারের অপেক্ষায় পুরো জাতি তাদের নিয়ে কোন রাজনৈতিক স্ট্রেটেজি নেয় সরকার।
হয়তো আবারো ৭১ এর খুনিদের, ধর্ষকদের স্রেফ লোকদেখানো লঘুদণ্ড দিয়ে জাতির সাথে আবারো প্রতারনা করা হবে। তবে গণজাগরণ থেমে থাকবে না। মুক্তির শুদ্ধচেতনা কখনো ম্রিয়মাণ হবার নয়।
তারুণ্যের চেতনায় বিপ্লবের রক্তিম সূর্যের তেজদিপ্ত আভা দেশকে যুদ্ধাপরাধীদের কালো ছায়া থেকে মুক্ত করবে। হয়তো প্রতিকুলতা, প্রতিবন্ধকতা আরও আসবে। তবুও তরুণ চেতনা সত্যের প্রতিষ্ঠায় থাকবে চির অনির্বাণ।'