আবার দেখা হবে;
আমি যখন সন্ন্যাস ব্রতে গহীন বনানীতে
তুমি আসবে মধুচন্দ্রিমায়-
এক রূপবান 'গৃহী' পুরুষের সাথে।
প্রথম দিনেই হয়তো আমাদের দেখা হবে না
তুমি গুছিয়ে নিতে ব্যস্ত তোমার
চন্দ্র-সংসার;
আর আমি তখনো নিমগ্ন।
অপ্সরীরা এসে ফিরে গেছে একটু আগে
দেহের সুরভী,নৃত্যের ছন্দ সব ক্লান্ত
হয়ে পড়েছে তাদের;
সাগরে জোয়ার আনতে এসে উল্টো তারাই
ভেসে গেছে আমার রুক্ষতার
জলোচ্ছ্বাসে!
কিন্তু হঠাৎ রুক্ষ সাগরে একটা ঢেউ
উঠে-
নিস্তর দেহ উঠে কেঁপে;
তুমি তখনো গুছিয়ে নিতে ব্যস্ত তোমার
চন্দ্র
সংসার!
দ্বিতীয় দিনও দেখা হবে না আমাদের;
তপোবনের শীতল
কুটিরে ছনে ছাওয়া জানলায়
চোখ রেখে
বেগুনি ময়ূরের নৃত্য দেখে দেখে
তোমার ঠোঁটে সাতটি তারা!
আর আমার ধ্যানভঙ্গের প্রথম ধাক্কা-
যে চোখ
রূপোলী জোৎস্না দেখে নি এতকাল
একটি,
কেবল একটি তারা দেখবার আকুলতায়
আজ সে কি অস্থিরতা তার!!
পরদিনও আমাদের দেখা হবে না;
সহস্র ফুলের সুবাস অবজ্ঞা করে
ভৃত্য বায়ু বয়ে নিয়ে আসবে এক
পরিচিত সুগন্ধ;
তুমি তখন ঘোড়ায় টানা গাড়িতে
বেরিয়েছ সকাল-সফরে;
যাচ্ছ আমার উত্তর সীমানার ঠিক ধার
ঘেঁষে!
সেই গন্ধের আকুলতা আমায়
করে দিবে আরও চঞ্চল
যে আমি এতকাল অনড় ছিলাম অশ্বত্থ
বৃক্ষের মত
সেই আমি কি এক মহুয়া গন্ধের টানে
উড়াল দিব ভৃত্যের পিছু পিছু
ধ্যানভঙ্গের অভিশাপ উপেক্ষা করে।
ধ্যান
পুরোপুরিভাবে ভেঙে যাবে পরদিন
একটি চিৎকার শুনে আমি তুচ্ছ করব
ধ্যানবেদী
তুচ্ছ করে এতকালের সাধনা-
দৌঁড়ে যাব শব্দের উৎসের পানে!
অনেক দূর থেকে দেখব এক যুবক
ছুটছে এক স্বর্ণালী মৃগের পিছু!
আর দেখব তুমি!
তোমার ঠোঁট-ঠোঁটে সাতটি তারা।
তোমার চুল,চোখ,মুখ,নাক
সব আগের মতই আছে-
শুধু কপালে একটা রাঙা সূর্য এই যা।
সূর্যটা আরও কাছ থেকে দেখবার জন্য এগোয়
দেখি যুবক ফিরে আসে ব্যর্থ কাঁধ নিয়ে।
তোমার ঠোঁট তারা শূণ্য মূহুর্তেই!
আমার কি জানি কি হয়
এক নিমেষেই দেখি-
আমি একটি স্বর্ণ মৃগ!
ছুটে চলছি তোমার পানে;
তোমার
ঠোঁটে সাতটি তারা জ্বলে আবার।
আমাদের দেখা হয় অনেকদিন পর
স্পর্শ কর তুমি-
আদরে বুকে জড়াও আমাকে-
অনুভব করি মহাজাগতিক শ্রেষ্ঠ
সুখটি-স্বর্ণ মৃগের বুকের ভেতরে।
যে ব্রত নিয়ে ধ্যানে বসেছিলাম-
ধ্যানভঙ্গের অভিশাপ মাথায় নিয়ে
তোমার মধুচন্দ্রিমার শুভলগ্নে
সেই সুখটি পেয়ে-
আমি পেয়ে যায় ব্রতভঙ্গের শুভ
মুক্তি!
"কাসু"