আমি আজ দলিত মথিত,
আমার আশ্রয় আজ আস্তাকুড়ে।
আমার দেহের রঙ আজ বিবর্ন,
মুঠোয় মোচড়ানোর অসংখ্য ভাজে
আমার শরীর আজ তাই রুক্ষ-অমসৃন,
আজ আমার প্রয়োজন ফুরিয়েছে,
আমি আজ তাই নিক্ষিপ্ত আবর্জনা।
আমার বুকের পরে কিছু আঁকিবুকি সংখ্যা
বইছে আমার জীবন ইতিহাস।
সব চাল ডাল নুন তেলের হিসাব;
মিলাতে গিয়ে কর্তাও উঠেছিলেন হাঁপিয়ে
তারপর বাজার শেষে, মুঠোর মধ্যে মুচড়ে
আমায় ছুঁড়ে দিলেন রাস্তার ধুলোয়।
ক্রমশ ধুলায় বুজে আসছে শ্বাস,
অন্ধকার হয়ে আসছে পৃথিবীর ঝলমলে সুরত।

অথচ আজ অন্যরকমো হতে পারতো-
আমি কোনা ব্যাংকের চেক, অথবা
কোম্পানীর বহুমুল্য শেয়ারের দলিল,
কিংবা ধনীর সেফে রক্ষিত বণ্ড,
এর যে কোনোটাই হতে পারতাম।
অথবা কোনো কালজয়ী উপন্যাসের পাতা,
প্রেমিকার হাতে লেখা চিঠি,
কিংবা কারো প্রিয় গোপন ডায়রী খাতা,
তাও হওয়া অসম্বব কিছু ছিল না।
আমারও ছিল উন্মুক্ত সম্ভাবনার খোলা দুয়ার...
আমার অন্যসব জাতভাইেরই মতো।
যারা একসাথে মণ্ড ছিল আমারই মতন
কোনাে এক কাগজের কলে।
একসাথেই আমরা বেরিয়েছি পৃথিবীর পথে।
তারপর,
আমি কেন তবে হলাম বাজারের ফর্দ
আর ধুলায় লেখা হল নিয়তির শেষটা?
কেন এমন পরিণতি আমার?
দায়ী কে? আমি? ভাগ্য-
নাকি অন্য কেউ? উত্তর জানা নেই।
হয়তো মিলবেও না কােনোদিন।
উত্তর জেনেই বা কী হবে আর!
জোর বাতাস উঠেছে, সাঝের ধুলো উড়ছে
বাতাসের  ধাক্কায় এখনি পড়ে যাবো নর্দমায়
কাদায়-পাকে ঢাকা পড়ে যাবে একটি বাতিল কাগজের
সব দীর্ঘশ্বাস, সঙ্গে জীবনেতিহাসও।