পাথরটা কেবল গড়িয়েই চলেছে।
সমতল ভুমি বলো, আর চড়াই উৎরাই
কিংবা নদীর তীরের নরম পলিমাটি,
সবখানেই গড়িয়ে পার হয়ে গেছে
রুক্ষ-মসৃন, কঠিন সেই পাথরটা।
অথচ শেষকালে কিনা-
ঢালু একটা পাহাড়ি উপত্যকায় জন্মােনো শ্যাওলায়
হোচট খেয়ে থমকে গিয়েছিল পাথরটার গড়িয়ে চলা।
পাথরটা ভেবেছিল, থমকে যখন গিয়েছি,
হয়তো একটু আদরমাখা ভালোবাসা,
একটু নরম স্নেহের উত্তাপ,
নিদেনপক্ষে উষ্ণ সমাদরতো পাওয়া যাবেই।
কিন্তু পাথরের ভাবনাটা ভুল ছিল।
পাহাড়ি উপত্যকার সেই শ্যাওলার খাঁজ
পাথরটার ওপর কঠিন প্রতিশোধ নিলো।
কেন নিলো? সেটা বোধহয় শ্যাওলাও জানে না।
কঠিন পাথরটার বুকে প্রথমে শ্যাওলা জমে গেল
পাথর ভাবল সবুজ শ্যাওলা তার রুক্ষ কঠিন বুক
ভালোবাসার শ্যামলিমায় ভরিয়ে তুলবে।
কিন্তু পরক্ষনেই আবার পিছলে গেল পাথরটা।
আবার শুরু হলো তার গড়িয়ে চলা।
অনন্তকাল ধরে গড়িয়ে চলছে পাথরটা..
পাথরটির বুকের গভীরে সবুজ একটা পোড়া দাগ।
অনাগত দিনের প্রত্নতত্ববিদরা হয়তো বলবে-
পাথরটির বুকে জীবাশ্ম রয়েছে।
কিন্তু তারা কী জানতে পারবে?
এ জীবাশ্ম গড়িয়ে চলা পাথরের
বুকে জমা একমাত্র ভালোবাসার শ্যাওলা।