কান্দো কেন বাজান?
ঘুম ভাইঙ্গা গেলে বুট জুতার শব্দে?
না না বাজান উইঠো না, তুমি ঘুমাও।
আমি এই যামু আর আমু।
সকাল বেলা আওনের সময়
জিন্দাপীরের মেলা থেইকা বাঁশি আনুম,
ঠিক আছে বাজান।
বাশি ভালানা? আচ্ছা বাজান আচ্ছা,
তোমার লিগা তাইলে বাজনাওলা টেরাক আনুম
সিরু মিয়ার খাজা ভাজা, নলী বুড়ির তিলের নাড়ু
কদম আলির বাতাসা আর এক বাক্স লজেন্স
ঠিক নিয়া আসুম দেইখো বাজান।
চিনির হাত্তি খইবা?  ও আাইচ্ছা ঠিক আছে বাজান,
হবির মিয়ার দুকান থে্ইক্কা মস্ত চিনির হাত্তি আনুমনে,
অহন যা্ই বাজান?
না না বাজান, আজকা আর ভুলুম না,
পরশুদিন আনি নাই? আইজ ঠিক নিয়া আসুম
তুমি দেইখো বাজান, ঠিক আনুম।
আবার গায়ের কেথাডা সরাও কেন?
পাগলা পোলা! কী কইবা কও,
কানে কানে কওন লাগবো না কও বাজান।
কেডায় তোমারে কইছে এইসব ?
মাইনষে, কুন মাইনষে কইছে?
আবুলের পুত কইছে!
হালার পুতের ঠ্যাঙ ভাইঙ্গা ফালামু না পাইলে।
মাইনষের কতায় কি আহে যায় কও
মাইনষে কী আমাগো খাওয়ায় না পিন্দায়?
মাইনষে খারাপ কয় আমি জানিরে বাজান
কিন্তু আমি কি আর সাধে করিরে বাজান,
তুমি বুঝনা কেন?
একলা ঘরে তুমারে  ফালায়া রাইত বিরাইতে
বাইরে যাইতে আমারো কষ্ট লাগে যে বাজান।
কিন্তু কি করুম কও বাপ আমার।
তুমার মনে আছে.
দুই বচ্ছর আগে-
যেইবার তুমার দাদাজান কব্বরে গেছিলো,
রোজার ঈদে তোমারে নতুন জামা দিবার পারি নাই
ঈদের দিন কত্ত কানছিলা তুমি।
অহন তোমার কত্ত জামা তাইনা বাজান?
এইযে পিন্দনের লাল জামাডাও পরশু আনলাম।
এইসব দেইখা মাইনষের চোখ টাটায়।
আর হ্যারায় কইয়া বেড়ায়- আমি নাহি মুর্তি বেচি
কালা পাথরের মুর্তি, আন্ধার রাইতের সোনা।
হ বাজান আমি রাইতে কালা পাতরের মুর্তি বেচি
রাইতের লগে কালাপাথরের ভাব বেশি
তাইতো আমার রইতে বাইরে যাইতে হয় বাজান।
না বাজান। তুমি কালা পাথর দেইখ্যা কি  করবা
তুমার কাম নাই কালা পাতর দেইখ্যা
তুমি ইস্কুলে যাইবা মস্ত ডাক্তর অইবা।
সাদা পিরান পিন্ধা মানুষ বাচাইবা।
তুমার লেইগা আমি সাদা পাথ্থরের ঘর বানামু
তুমার উপ্রে আমি কালা পাথরের ছায়া পড়তে দিমু না।
পাপ!
কালা পাথর বেচলে পাপ হয় কেডায় কইছে তুমারে?
তুমি ছোড মানুষ পাপ-পুইনণ্য কী বুঝ?
জুম্মার হুজুরে কইছে! শুক্রবারে,
হরে বাজান, কালা পাথর পাপে কালা
আমার হাতে কালা পাপ লাগছে।
কিন্তু খিদা লাগলে তহন
হুজরের পানি পড়ায় পেট ভরে নারে বাজান।
পেডে আগুন লাগলে তাইনা আমি,
আন্ধার রাইতে কালা পাতর বেচতে যাই।
আইচ্ছা ঠিকআছে বাজান। আর জামুনা।
এই বচ্ছর বন্দের জমিডি ছুডায়া লই
এরপর বাজান হারাদিন ক্ষেতে কাম করুম
তুমি ইস্কুল তন ফিরা ভাত নিয়া  যাইবা মাডে
আমাগো বাড়ির উডানে ধানের পালা দিমু উচা কইরা
তহন আমরা বাপ পুতে গলা ধইরা হারারাইত ঘুমামু।
মোবাইল ডা বাজতাছে বাজান,
জঙ্গলের ধারে পার্টি খারায়া আছে
তুমি অহন ঘুমাও। আমি আইজকা যাই বাজান।
খুব সক্কালেই আইসা পড়মু
তুমি অহন ঘুমাও বাজান।