প্রেমিকা,
তুমি কি মানুষ, না এক মুখোশ-ধরা অভিনয়?
তোমার কপালের টিপে ছিলো ভক্তির ছায়া,
আর ঠোঁটে ছিলো আল্লার কসম—
আমার বুকের পবিত্রতাকে তুমিই অপবিত্র করলে।

তুমি ভালোবাসো বলেছিলে,
আসলে বলো তো— সেটা কি ছিলো?
একটি চুক্তিপত্র?
ধর্মের নামে ঠকানোর লাইসেন্স?

আমি আযানে খুঁজেছি পবিত্রতা,
তুমি সেই আযানের কসম তুলে করেছো বিশ্বাসঘাতকতা।
তুমি তো কেবল প্রেমিকা নও—
তুমি মুখোশের প্রতিনিধি,
তুমি শহরের সাজানো প্রতারণার প্রতিচ্ছবি।

তোমার চোখে প্রেমের ভাষায় মুখোশ ছিল,  
কিন্তু আমি পড়িনি চোখ— আমি পড়েছি প্রেম!  
তুমি যখন বললে “ভালোবাসি”,  
তখনও সেই শব্দের নিচে লুকানো ছিল মুখোশ।  
তোমার প্রতিটি হাসি, প্রতিটি আলিঙ্গন,  
স্নেহ নয়— ছিল সাজানো মুখোশ।

তুমি কসম কাটলে ধর্মের,  
বললে, “আল্লাহ্‌র কসম”—  
সেই কসমও ছিল এক নিঃস্ব ঈশ্বরের নামে উচ্চারিত মুখোশ।  
তুমি প্রেমে নয়, অভিনয়ে বিশ্বাসী,  
তোমার পবিত্রতার আড়ালে ছিল এক অশুদ্ধ মুখোশ।

তোমার ভালোবাসা ছিল নাটকের দৃশ্য,  
আমি ছিলাম দর্শক,  
আর তুমি ছিলে সেই চরিত্র যে  
প্রতিটি দৃশ্যে পাল্টাতে জানে নিজের মুখোশ।  
তোমার বুকের উষ্ণতাও মুখোশ!  
তোমার দুচোখের জল— মুখোশ!  
তোমার নীরবতা,  
তোমার ব্যস্ততা,  
তোমার ধর্ম, তোমার ঈশ্বর—  
সবই মুখোশ!

এই শহর এক মেলা,  
প্রতিটি মানুষ এক এক চরিত্র,  
আর প্রত্যেকের হাতে এক থলে মুখোশের!  
আমি মুখোশহীন ছিলাম,  
তাই রক্ত ঝরেছে আমার সত্যিকারের চেহারায়।  
আমি মুখোশ পরতে পারিনি,  
কারণ আমি ভালোবেসেছিলাম, অভিনয় করিনি!

তোমার প্রেমে আমি পুড়েছি,  
তোমার প্রতারণায় আমি ভেঙেছি,  
তোমার ধর্মীয় অভিনয়ে আমি নির্বাক হয়েছি।  
তুমি বলেছিলে, “তুমি আমার ইবাদত”  
কিন্তু সেই কথাটিও ছিল এক ধর্মীয় মুখোশের ছায়া।  

তুমি কেবল আমাকে ঠকাওনি—  
তুমি ঠকিয়েছো আল্লাহকে, ধর্মকে, আত্মাকে।  
তোমার প্রতিটি প্রতিশ্রুতি এখন আমার কবিতায়  
জ্বলন্ত অক্ষরে লেখা— মুখোশ!

আমি এই মুখোশপরা শহরের বিরুদ্ধে লিখি,  
প্রতিটি ছলনার বিরুদ্ধে দাঁড়াই,  
প্রেমের নামে প্রতারণা করার সংস্কৃতির বিরুদ্ধে  
আমি কলম চালাই— মুখোশ! মুখোশ! মুখোশ! মুখোশের মিছিল।

"মুখোশের মিছিল"_ মোহাম্মদ শেখ কামালউদ্দিন স্মরণ