একটা বিনাশী সংগীত জলসায় আমাকে বসতে হয়েছিল কালরাতে;  
আমাদের পূর্ব পুরুষেরা শতাব্দী শতাব্দী ধরে
যুগে যুগে
কালে কালে
কাজে অকাজে
রচনা করেছেন যে সংগীত, গেয়েছেন
মানবের সত্তা জুড়ে আঘাত হেনেছে ছড়
মানবীর দেহ খুঁড়ে আঘাত করেছে ছড়
বিনাশী সুরের মাঝে
মঙ্গল প্রলেপ মেখে
ছেড়েছেন তৃপ্তির নিঃশ্বাস-  
তেমনি এক সংগীত জলসায় আমাকে বসতে হয়েছিল কালরাতে

একটা শ্মশানে নৈশভোজে আমাকে বসতে হয়েছিল কালরাতে;  
টেবিল ঘিরে বসেছিল কতকগুলো লাশ
মৌ মৌ ঘ্রাণ শবের-কাফনের
আমার দম নিতে কষ্ট হচ্ছিলো
তারা নড়েচড়ে বসছিল, তারা হাসছিল
তাদের প্লেটে তাদেরই উপড়ানো চোখ
তরতাজা চকচকে চোখ
কাঁটাচামচ আর খাওয়ার কচকচ শব্দে
আমি শিউরে উঠছিলাম বারবার
তারা খুব বিশ্রীভাবে হাসছিল
তাদের লকলকে লালাভ জিহ্বা
চেটেপুটে নিচ্ছিল সারাপ্লেট-  
            প্লেটে ছড়ানো মানবীর দেহ
            প্লেট জুড়ে নারীর স্তন
            প্লেট জুড়ে নারীর যোনি
            প্লেটে বিক্ষিপ্ত ছড়ানো মানবের অস্থি মজ্জা পেশী
            প্লেটময় বীর্যের ঘ্রাণ
            আমাদের দু’টুকরো সুনীল আকাশ
            আমাদের অনাগত সতেজ সকাল
এইসব বিধাতার আশীর্বাদ ভেবে তারা খাচ্ছিল
তুলছিল তৃপ্তির ঢেঁকুর
তেমনি এক নৈশভোজে আমাকে বসতে হয়েছিল কালরাতে

আমাকে কাঁদতে হয়েছিল কালরাতে
আমাকে মরতে হয়েছিল কালরাতে
কালরাত ভিজেছিল শিশির আর জলে
_________________________________
কামাল
ঢাকা, ৩১ আগস্ট ১৯৯৩