আজকাল খুব সতর্কে থাকি,
সব কিছুই বেশ দূরত্বে রাখি।
কাছে ঘেঁসতে দিই না প্রায় কোনো কিছুই-
আজকাল খুব সতর্কে থাকি।

বিছানায় ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে থাকা-
পাশবালিশ টাকেও আলতো করে সরিয়ে দিই।
চেপে ধরি অ্যালকোহল ঘষা রুমাল তার মুখে।
দেখি, নেতিয়ে পড়ে সে পায়ের তলায়,
আশ্রয় নেয় কোনার দিকে।
শুনেছি, এই কোহলে নাকি নেশা হয় না;
শুদ্ধ হয়, পবিত্র হয় শরীর।
আচ্ছা! তাহলে গঙ্গা জলের বিকল্প এলো কি?
কিংবা হোলি ওয়াটার বা জমজম পানি?
নাঃ! অত চিন্তাদের আর ঘুরপাক খেতে দিই না।
আজকাল খুব সতর্কে থাকি,
সব কিছুই বেশ দূরত্বে রাখি।

বসে থাকি গুম হয়ে, দেওয়ালে তাকাই আর অবাক হয়ে যাই!
আহারে, কোনোদিন গুনিনি তো তার গায়ের আঁচড়,
কপালের ফাটল কিংবা বিস্ফোরণের গর্তগুলো-
হ্যা, এটাই হয়তো কোনোদিন কুরুক্ষেত্র ছিল।
এখানেই হয়তো ঘটে গেছে বিপ্লব।
এখানেই হয়তো কোন এক কালে-
যীশুকে কুপিয়েছে পেরেকেরা।
টিক! টিক! টিক! সময় না সরীসৃপ বুঝতে পারি না।
বুঝতেও তেমন আর চাই না।
আজকাল খুব সতর্কে থাকি,
সব কিছুই বেশ দূরত্বে রাখি।

জানলার শিকগুলো যেন বেশিই সোজা।
কি দৃঢ় মেরুদন্ড তাদের! বেশ ভালো লাগে।
দু-একটাতে জং ধরেছে অবশ্য-
অত গ্রাহ্য করি না।
আমি আদর করে গরাদের ধুলো মুছি,
মাঝে মধ্যে একটু তেলও ঘষি।
এই কংক্রিটের দূরবীন আমার বড়ই প্রিয়।
আগে বেশ পূর্ণিমা নামতো এই জানলায়,
সোহাগ ভরে, ফোকর গলে...হামাগুড়ি দিয়ে।
এখন আর দেখি না, এখন শুধুই গ্রহন!
অবশ্য এতে আর তেমন দুঃখ পাই না।
আজকাল খুবই সতর্কে থাকি,
সব কিছুই বেশ দূরত্বে রাখি।

********************************