রক্ত ঝরে, মানুষ মরে কার কী আসে যায়
বিবেকবুদ্ধি এদেশ থেকে নিয়েছে বিদায়
আছে শুধু লোকদেখানো ভণ্ডসাধুর দল
পাপের ভারে কাঁপছে পৃথ্বী, এ কোন শাপের ফল?
রক্তমাখা অসি দেখে গর্জে ওঠে মসী
পরের তরে জীবন দিলে তবেই সন্ন্যাসী।
আগুন ঝরাও যুবকবীর অসুর মরুক পুড়ে
শান্তির বাতাস বয়ে চলুক বিশ্বভুবন জুড়ে।
কেউ শোন কি এই আহ্বান? নাকি আছো কান চেপে
যুদ্ধের ভয়ে ক্রীতদাস হলে শত্রুর পা টিপে
আফসোস হয় তোমাদের দেখে পুরুষাকৃতির মানুষ
কাপুরুষ না হলে তোমরা হতে মহাপুরুষ।
ধর্ষিতার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলে ব্যাধিগ্রস্ত সমাজ
পোশাকের দোহাইতে কেবল নারীর নাই লাজ।
সমাজের চোখে নিষ্পাপ ধর্ষকের হাস্যোজ্জ্বল মুখ
পুরুষদেহে বয়ে আনে এক পৈশাচিক সুখ।
অবোধ মনে প্রশ্ন জাগে, পুরুষ কাকে বলে?
জ্ঞানীগুণীর মতে শুনি অনেক সংজ্ঞাই চলে।
আগে মানুষ তারপর পুরুষ, এই পরিচয়
ব্যভিচারী, ধর্ষক কভু পুরুষ নয়।
নারীপুরুষ এই জগতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ
বিতার্কিকরা করেন মাঝে মিছেই শান্তিভঙ্গ
কেউ জানে না সৃষ্টিতত্ত্ব, কেউ মানে না সত্য
সংসারেতে গোল বাধাতে হয় সকলে মত্ত।
জেলে বন্দি নিরপরাধ, অপরাধী বাইরে
ঘুষের টাকায় জজসাহেবের পেটটা ফেটে যায় রে
পুলিশ দেখে আঁতকে ওঠে জনসাধারণ
সন্ত্রাসীদের পুলিশ জানে ভাইয়ের মতন।
শ্রবণশক্তি আছে বলেই শুনতে পাই আহতের চিৎকার
শুনতে পাই, মেইন রোডে গণপিটুনি খাওয়া চোরের হাহাকার
ওদের পাশে দাঁড়াতে গেলে একদল মানুষ আমায় ভাবে বেঁহুশ
আমি ভাবি এই একদল কি সত্যিই মানুষ?
দুঃস্বপ্ন বলে মনেহয় প্রতিটি হত্যা, প্রতিটি ধর্ষণ, প্রতিটি দুর্ঘটনা
নির্বাক থেকে স্বার্থপর মানুষ করে মানবতার সাথে প্রতারণা।
মুখ বুজে, সঙ সেজে বেঁচে আছে মানবপুতুল
মানবে বাকশক্তিদান তবে কি বিধাতার ভুল?
কোথাও নেই কোন প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর
অস্তিত্বহীন, মেরুদণ্ডহীন, প্রাণহীন এই প্রান্তর
হয়ত কোন এক তরুণ যোদ্ধা প্রস্তুত হচ্ছে, একদিন হবে ধর্মের জয়
নিরীহ,নিষ্পেষিতের দল চেয়ে আছে মহাবীর, তোমার অপেক্ষায়।
মৃত্যু যেথা নতশিরে মেনে নেয় পরাজয়
মুষ্টিবদ্ধ হাতেরা ঊর্ধ্বমুখে আঘাত হানে নির্ভয়
সেথায় এখনো জীবন আছে, সেথায় আছে প্রাণ
বিদ্রোহে, বিক্ষোভে, বিপ্লবে এই জীবনের জয়গান।
(জীবনমুখী কবিতা আবৃত্তির জন্য)