আলোচ্য কবিতাঃ
সর্বনাশা প্রেম
- সোমালী
চৈত্রের আকাশে এক সর্বনাশা প্রেম!
রক্তের সন্ধানে পিপাসিত , মেঘরাশিতে
উঠেছে ঝড়
অবয়ব ঘিরে বিষাক্ত চুম্বন, এই কী প্রেম?
ডুবন্ত অনুভূতি যন্ত্রণা সাগর
তবু, তবু হৃদয় হারিয়ে বারবার
নিষিদ্ধ প্রেমরসে সুখ-মৃত্যু-কুসুম
পরিণত অপরিণত জৈবিক আহ্বান, প্রেম প্রেম আর
প্রেম
মাঝ সমুদ্রে হারিয়ে গেছে ঘুম।
আত্মা না কি পরমাত্মা? কোথায় সে বাজে?
অন্ধকার
তার সুরে আমি যে সর্পরূপী, তোমার কন্ঠস্থ
বিষ আরো একবার।
চৈত্রের আকাশে, আমি
সর্বনাশা প্রেম তোমার..... চৈত্রের আকাশই
আমি,
তোমার কন্ঠস্থ বিষ আরো একবার.....।।
---#---
★সর্বনাশা প্রেম! তাও আবার চৈত্রের আকাশে! এ বড় অদ্ভুত প্রেম। এরও পিপাসা আছে, কিন্তু সেটা রক্তের পিপাসা! এখানেও আছে চুম্বন, কিন্তু সেটা বিষাক্ত চুম্বন!
এই সব ঝাঁঝালো বাক্য বিন্যাসের পর কথক প্রশ্নবিদ্ধ হনঃ
"এই কী প্রেম?
ডুবন্ত অনুভূতি যন্ত্রণা সাগর"
"প্রেম" শব্দটা বলতেই যে মধুর অনুভুতি, মনের ভিতর ঝলমলিয়ে উঠে, প্রেম যে আসলে অতোটা সুখ সুখ, বিষয় নয় - প্রথম স্তবক জুড়ে শুধু তারই প্রবল অথচ সংশয়ী উচ্চারণ দেখতে পাই।
★২য় স্তবকে দেখি যে, যতো যাই ঘটুক প্রেম যে চিরকালই আকাঙ্ক্ষার ধন, দুঃখ পেয়েও আবার সে প্রেমের পায়েই পড়ি; শান্তির ঘুম কেড়ে নেয় যে ভালবাসা, সমস্ত অন্তর সেই একই ভালবাসার বিছানায় খুঁজে সুখের ঘুম! ভালবাসার এই পরস্পর বিরোধী প্রকৃতিই এ কবিতার মূল উপজীব্য বলে আমার মনে হয়েছে।
★আত্মা না পরমাত্মা? কোথায় প্রেমের উৎস? কোথায় এমন হাহাকার সুরের মতো বাজে? সে যেখানেই হোক কথক তা আরো একবার চান।
"তোমার কন্ঠস্থ বিষ আরো একবার।"
কথক এখানে কাঙ্ক্ষিত প্রেমকে "কন্ঠস্থ বিষ" এর সাথে তুলনা করেছেন। কিন্তু আমার প্রশ্ন হচ্ছে যাকে "তোমার" বলা হল, তাকে কি সাপের সাথে তুলনা করা হল!? আমি জানি না!
★এ কবিতা পড়ে মনে হল, "প্রেম" এমন এক "বিষ" যা মানুষ আগ্রহ সহকারে পান করে। "প্রেম" এমন এক "অগ্নিকুণ্ড" যেখানে মানুষ ইচ্ছে করে ঝাঁপিয়ে পড়ে!
★এটা ঠিক যে কবি সোমালীর কবিতা একটু মনযোগ দাবী করে। কিন্তু তার কবিতাকে দুর্বোধ্য বলাটা অন্যায়ই হবে। তাছাড়া কবিতা সবসময় "বক্তব্য" নয় যে বুঝতে হবে। কবিতা কখনো কখনো হতে পারে "বোধ" যাকে অনুভব করতে হয়।
কবি সোমালীর জন্য শুভ কামনা।
হ্যাপি রাইটিং :)