দেখিনু সেদিন, কাহারে যেন কবির সাজে;
কহে ধরণী, "এত সৌন্দর্য তোমার দেহ মাঝে।"
চারিদিকে পুষ্পরাজি ফোটে বসন্তে,
সকলের শ্রেষ্ঠ সুর যেনো কোকিলের কণ্ঠে।
কোথা পেলে এত সৌন্দর্য তবে ?
কহো না মরে মোরে—
মুড়িয়া রাখিবো তোমায় কবিতার ভাঁজে;
রহিয়াছে কেউ দাড়িয়ে তাহার পাশে;
পরনে এপ্রন, হাতে হ্যান্ড গ্লাভস, আর গগলস চোখে;
কহে সে, "কেমনে আসে এ বসন্ত তবে ?"
শীত-গ্রীষ্মের আবির্ভাব হবেই—বা কেমনে?
অবাকে চক্ষু মেলিয়া কহিলাম, "হে ধরণী,
বৈচিত্র্য কত তোমার, কত রূপী তুমি....!!"
কবির চোখে কাব্যময় স্পর্শ কোমলতার,
দার্শনিকের চোখে অজানা রহস্যের সমাহার;
শ্রমজীবী খুঁজে পায় শুধু অন্ন তাহার।
বসন্তের সকালে, সেদিন দেখিনু চাহিয়া—
ফুলের গন্ধে, কোকিল কণ্ঠে,
তুমি সৌন্দর্যে ভরিয়া।
আবার, কালবৈশাখী ঝড়ে করিলা ধ্বংস:
গরীবের কুড়েঘর,
বসন্তে কোমলতা, গ্রীষ্মে হিংস্রতা—
কত রূপ তোমার…?
এত সবের ভিড়ে,
একখানা ক্ষীণ কণ্ঠে,
কে কয় করিয়া চিৎকার…?
নাহিকো মোর দরকার;
হে ধরণী, সৌন্দর্য তোমার-রহস্য জানার।
চাওয়া মোর একটাই—
শুধু আমি বাঁচিবার চাই;
ধরণী মাঝে অন্ন করিয়া আহার।
দার্শনিকে কহে, "রহস্য তোমার করিবো আবিষ্কার;"
কবিগণ কহে, "মুড়িয়া রাখিবো
কবিতার ভাঁজে শত রূপ তোমার।"
শ্রমজীবী কহে,
"এত সবের ভিড়ে,
আমার শুধু অন্ন চাই—অন্নচাই করিবো আহার।"
উত্তরিলা ধরণী এতক্ষণে,
"রচিত আমি, তেমনি তাহার তরে;
চাহিয়া দেখিবে মোরে যেমতি চোখে।"