কবিতা,
তোমায় দিলাম ১৯৪৭,
যাও তুমি মুক্ত, তুমি স্বাধীন।
যাও তুমি তাড়িয়ে দাও জোর করে চেয়ে বসা অবিভাবক-কে,
যাও তুমি কেড়ে নাও তোমার পূর্বপুরুষের সম্পত্তির দলিল।
ছেড়ে দাও তুমি তার দেওয়া সস্তার ফ্রক-চুড়িদার,
যাও হয়ে তুমি তাঁতে বোনা কুচবরণ কণ্যারে তোর মেঘবরণ কেশ।

ক্ষান্ত তুমি ?
হয়েছে মনে শান্তি ?
পেলে কি তুমি মুক্তির বাতাস ?
হল কি তোমার সাধপূরণ ?

এ কি কবিতা !
তুমি কেন অর্ধন্গ্ন ফুটপাতের ধারে ?
ল্যাম্পপোষ্টের নিচে, রেল লাইলের ফাঁকে ?
তুমি কেন, তোমারই অট্টালিকার সামনের ড্রেন-এ ?
এ কি তোমার হাল ?
কুঁচবরণ থেকে তুমি আজ কৃষ্ণকায়,
তোমার নরম চামড়া পুড়ে চারকোল,
তোমার মধুপূর্ণ ঠোট শুকিয়ে কড়িকাঠ !

চেয়েছিলে না তুমি স্বাধীনতা ?
চোয়োছিলে না তুলে দিতে নিজের হাতে অন্ন
তোমার ছেলের মুখে ?
আজ তোমার ছেলেরাই সেজেছে অবিভাবক তোমার,
ভেঙে খেয়েছে সম্পত্তি, চুষে খেয়েছে রক্ত তোমার,
আজ তোমার ছেলেরাই করেছে তোমার এ হাল,
আজ তোমার ছেলেরাই তোমাকে বেঁচেছে
ভাড়াটে জল্লাদেদের আড্ডাখানায়।
হ্যাঁ কবিতা,
তোমার ছেলেরাই কবর দিয়েছে তোমার স্বাধীনতাকে,
তোমারই চুলোর জমিয়ে রাখা মরা ছাইপাশ-এ।