বুক পেতে দু'হাত প্রসারিত করে , রাজপথে দাঁড়িয়ে মৃত্যুকে পরাজিত করে আবু সাঈদ ।  
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন  ব্যানারে  দেশব্যাপী ছাত্র ছাত্রীদের তখন উত্তাল ঢেউ ।
প্রতিদিনের  মতো সেইদিনও বেরোবি ক্যাম্পাসে জড়ো হয়েছিল -লেজুড় বৃত্তি, পা চাটা কতিপয় পুলিশ,ছাত্রলীগের ছেলেরা ।

কি হয়েছিল সেদিন, পুলিশ কে গুলি করিতেই হবে?  বড় কোনো সংঘর্ষ বাঁধেনি ,পুলিশের অস্ত্র কেড়ে নেওয়ার  মতো ঘটনাও  ঘটেনি। সবাই যখন টিয়ারসেল, রাবার বুলেট আর সাউন্ড গ্রেনেডের  বিকট আওয়াজে  পিছু হটছিল । তখন  আবু সাঈদ একাই নেতৃত্ব দিচ্ছিল,ছত্রভঙ্গ মিছিল একত্রিত করে প্রতিবাদ  জানাতে - দেশীয় অস্ত্র শস্ত্র হাতে পুলিশের পাশেই  ছিল  ছাত্র লীগের গুণ্ডরা । প্রথমে একটি গুলি এসে লাগে আবু সাঈদের  পাঁজরে । তখন আবু সাঈদ  নিজেকে সামলে মেরুদণ্ড সোজা রাখে।

তাঁর ডান হাতে ছিল একটি ছোট্ট লাঠি, গায়ে ছিল কালো রংয়ের  টি শার্ট । কয়েক সেকেন্ড  ঘুরে দাড়াবার চেষ্টা, কিছু বুঝে ওঠার আগেই আরো কয়েকটি গুলি - এসে বিদ্ধকরে তাঁর শরীর ঝাঁঝরা করে । ডগ্ ডগ রক্ত ছোপে রাস্তা ভিজে ।    সহযোদ্ধা ছুঁটে আসছে,  তখনো সে মরেনি । নিরাপদ স্থানে পৌঁছাতে কয়েকজন সহযোদ্ধা  লাশটিকে ধরে।

গুলিবিদ্ধ আবু সাঈদ  রক্তাক্ত শরীরে মাথা ঘুরে পড়ে । বৈষম্যের শিকার আবু সাঈদ, সবার প্রতীক হবে আজ । সে কথা  কোনদিন ভাবেনি   কেউ, ভাবেনি পৃথিবী ছেড়ে  যাবে । মোবাইলে বাড়ি যাওয়ার কথা হয়েছিল আবু সাঈদের । টিউশনি সেরে রাত দশটায় বাড়ি যাবে ।

কিন্ত যাওয়া  হলো না আর । রংপুর মেডিকেল ভর্তি, কর্তব্যরত চিকিৎসক, রাত আটটায়  তাঁর মৃত্যুর সার্টিফিকেট  ঘোষণা করে ।
  
জোড়গাছা : ০৬. ০৯. ২০২৪