কী সম্বলই রেখে যাবে কফিনের ভিতরে ?
কফিনের ভেতরে দেখো ভাইয়ের লাশ ।
কফিটাই শেষ স্মৃতি, শেষ সম্বল
এই কষ্ট  কি সহ্য করার ?  
কী করেই বা লাশটি দেখাই  ?
কী করেই বা লাশটি দাফন করি ?
মুখ নেই, মস্তক নেই, ছিন্ন ভিন্ন দেহ ।
মাটির  সাথে  মিশে গেছে রক্ত ,
লাশের খন্ডিত সব অংশ ।
মস্তকবিহীন  সরু লাশ !
গ্রামে নিয়ে  যাওয়া হচ্ছে।

কী নৃশংস বর্বরতা ! মনে দাগ নেই
একটুও,  বুক কেঁপে ওঠেনি ওদের !
এভাবেই হত্যা  করতে পারল ।  
আমার নিরপরাধ ভাই কে ?  
ফেরীতে পদ্মা পারাপারে হঠাৎ খবর এলো -
লাশের বাকি অংশ  পাওয়া গেছে ।
ফিরে যাওয়ার অবস্থা নেই, এক আত্মীয়কে
ফোনে বলছিল - ভাইয়ের লাশের বাকি অংশ  পুলিশের কাছ থেকে বুঝে নিতে ।

একটি লাশের কথাই কি শেষ হবে?  
কত লাশের কফিনের কথা বলি।
সারিসারি লাশে, ঢাকার রাজপথ  
এইভাবেই রক্তে রঞ্জিত জুলাই বিপ্লবীরা ।
প্রাণ দিয়েছে  অকাতরে, নির্ভয় দেশের  জন্য হয়ে । যাত্রা বাড়ি ফ্লাইওভার নিচে, পুলিশের ভ্যানে, স্তূপীকৃত লাশের ছবি । কে না দেখেছে, কী নির্মম সেই  ছবি ! সেইখানেই তো দেখেছি  ৫ আগস্টে  কী ভয়াবহ মৃত্যু ঘুঘুর ফাঁদ ।  

জীবন বাঁচানো হয়ে ওঠেনি, লুকিয়ে ছিল মানুষ ফ্লাই ওভারে নিচে । পিলারের ঠিক  অপজিট পাশেই  কিছু অসহায় নিরস্ত্র মানুষ । গুলি খেয়েও  পালিয়ে যাচ্ছে একটি ছেলে । প্রথমে মনে হচ্ছিল পুলিশ গুলি করবে না । কিন্তু  ভাগ্য  বলে কথা , সেও বাঁচেনি ।

সাদা পাজ্ঞাবি  পরিহিত আগন্তুককেও পুলিশ সরাসরি  গুলি করে । দেখেছি  লাশ মরেনি বেঁচে আছে। পুলিশ ভ্যানে লাশের উপরে লাশ । গাড়ি  থেকে ফেলা হলো  ইয়ামিনের দেহটা ! দেখেছি ঠান্ডা মাথায়ও খুব কাছে থেকেও পুলিশ গুলি করে হত্যা করে ।

হেলিকপ্টার  থেকে গুলিবর্ষণ শিশু, কিশোর, পথচারীর মৃত্যু । যাত্রা বাড়ি, রায়েরবাগে শিশু আহাদ । চার বছরের ফুটফুটে সন্তান । মায়ের কোল খালি করে এই যুদ্ধে ।  নাম বলতে গেলে  কত নামই  বলি ।

হাজারো প্রাণের বিনিময়ে , আর লক্ষ অঙ্গ হানির বিনিময়ে,  লাশের কফিনের শেষ পেরেক-  ৫ ই আগস্ট গণঅভ্যুত্থান । স্বৈরাচারীর পতন ঘটে ।

স্থান : জোড় গাছা  ২৭.০৯.২০২৪