"অধিকতর ধারণা আবার কী?
আমি অনেক কিছুতে অভিজ্ঞ, এমন ব্যাপার না।
বলতে পারো পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নিই জলদি
এতটুকুই সামর্থ্য, এর বাহিরে আসলে আর কিছু না।"

" আচ্ছা বুঝলাম, আপনি সহনশীল, বিবেকবান-
কিন্তু পুরুষ মানুষ তো, তাই অনাস্থার জায়গা আছে।
কিছুটা ইন্টারোগেট করবো অগোচরেই আপনার
আসলেই কী আসল মানুষ বসেছে আমার কাছে!"

হাত বাড়িয়ে দিলো মাসুদ, ঠোঁটে স্মিথ হাসি তার। হাতঘড়ির গ্লাসে তখন বিম্বিত হচ্ছে তরুর কৌতুহলী চোখ!

" নাও, চিমটি কাটো, সতেজ এখনো বাসি পঁচা নই
যা খুশি জিজ্ঞেস করো আপত্তি করবো না আমি।
এমনও না এড়িয়ে যাব বেজায় শক্ত প্রশ্ন হলে
সৎ-সাহস আছে প্রকাশ করতে নিজের বদনামি।"

" পকেটে কী কী আছে টেবিলে রাখেন তো
উমমম লাইটার! তা ছুড়ি কাঁচি কিছু নেই আর?
ওয়ালেটের দেয়ালে কারোর ছবি আছে নাকি?
এবার ওটাও দেন, দেখি দেখি স্ক্রিন ফোনটার! "

একে একে তরু সব খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছে। তীর্যক চোখে তাকাচ্ছেও মাসুদের চোখে। নাহ বিরক্তির রেশ নেই, ও হাসে মিটমিট। তিরিক্ষি মেজাজে আবার জেরা;

" সবই ঠিক আছে, তবে কিছুই যেন ঠিক নেই
স্মোক করার বিশেষ কারণ? কোন রমণীর ছ্যাঁকা?
আমার ছবিতো আপনাকে দেয়াই হইছে সেদিন
তবুও ফোনের ওয়াল কেনো এখনো আছে ফাঁকা? "

" এর মানে তুমি সম্মতি দিচ্ছো তাহলে আমায়!
রাখবো ফোনের ওয়ালে বধু সাজের ছবিটা, কেমন?
ছ্যাঁকার দাগ? সে বুকের ভেতরে রেললাইনের ক্রসিং
মিচকে ডাকাত নেই আর, আমি গ্যাংস্টার এখন। "

" না না সম্মতি নেই, বড়ো নচ্ছার তো আপনি!
ইশ! নিজের কুকর্ম নিয়ে কি সুনামটা না গায়!
আমার বিড়িখোর পছন্দ নাহ, লাইটার নিলাম
ছিঁলেও নিবো চামড়া বুকের যেন দাগ মুছে যায়।"

" এবার তাহলে কিছু অর্ডার করি ঠাণ্ডা-গরম?
নাকি আরো কিছু জানার আছে, হাঁফ ছেড়ে শুরু?
এই যে ডাকছি, হ্যালো হ্যালো কই তাকিয়ে হ্যাঁ?
ভারি জিদ্দি তো তুমি, কী হয়েছে কী তরু? "

মনোযোগ ফেরাতে মাসুদ তরুর হাত নাড়িয়ে দিলেই, এক ভয়ানক চোখে তরুর বিরক্তির প্রকাশ;

" আমাকে ছুঁলেন কেনো? অনুমতি নিছেন?
আমি আপনার কেউই না এখনো যে, উত্তরে যাব!
আমার জন্য ঠাণ্ডা নেন, মেজাজ চড়া আছে
কোল্ড কফি নেন, আমি কোল্ড কফিই খাব। "

হতবুদ্ধি মাসুদ তখনও গুছিয়ে উঠেনি। পরক্ষণেই খিলখিল করে হেসে তরু দেয়ালে প্রতিধ্বনি তুলে।

" চুপ চুপ! এ কেমন হাসি পাগলের মতোন?
তুমি তো বেশ ভালোই পাগলাটে আচরণ করো!
ভয়ই পাইয়ে দিলে একটু আগেই এখন আবার হাসি
দুষ্টামির গুদামে কী বাকি কিছু আছে আরো? "

" আহ্ আসছে পরিস্থিতির সাথে মানানো মানুষটা
মুড সুইংয়ের দেখেছেন কী হ্যাঁ, দেখেননি কিছুই!
আমার ঝালাতন সব মানা লাগবে, না শুনবো না
আমার আবদার ব্যস আপনার কাছে এতটুকুই। "

কলমেঃ কাবলিওয়ালা (২৯-০৩-২০২৫ সকালে)