এ সমাজ করিয়াছে মোরে নীড়হারা
যাতনার পদতলে ফেলিয়া করিয়াছে চেহনাহারা।
দৈন্যতা মোর পিতামহের দুয়ারে আঘাত হানিয়া
মোরে করিয়াছে ছন্নছাড়া বাউলা জলহীন নদের নাইয়া।
ক্ষুধার পীড়া মাতারে করিয়া অস্থির রাতদিন
মোরে করিয়াছে দুর্বল, অচল, চলিবার সামর্থহীন।
শৈশবের পথের দিশা হয়নি মোর নিয়তির লিখন
আজি মোর আঁখি জল হইতেছে নির্গত যখন তখন।
পাড়া-পড়শির বিষাদভরা দৃষ্টির যাতনা
শিখাইয়ে মোর করিতে নীড়হীন বাউলপনা।
ক্ষুধার নৈরাজ্যে নীতিবোধের ধারাবাহিকতা,
দিয়াছি জলাঞ্জলী, শিখিয়াছি ভবধারে পাপিষ্ঠতা।
বস্ত্রের স্বল্পতায় হইয়াছে ক্রমেই বাড়িয়াছে নির্লজ্জতা
মানব-মানবীর মাঝে খুঁঝে পাইনি তবু ক্ষীণ মানবতা।
আজি ধরা হইয়া কাল করিয়াছে মোর কাঙাল,
সর্বত্র ধনে মনে কুড়াইতেছি শুধুই নগ্ন জঞ্জাল।
নেশাগ্রস্থ ভুবনে বাহবার উচ্চশিখরে অপরাজিত যোদ্ধা
একখানি কবিতা লিখিয়া সুনাম কুড়াইছে অতৃপ্ত বোদ্ধা।
অতীতে ছিলাম সবুজ শ্যামল গ্রামের কাঙাল ঘরহারা,
আজি আধুনিক এ সমাজে বস্তির ছাপড়াহীন নীড়হারা।