আজ ১৭ মার্চ, ২০১৮ রোজ শনিবার বিকেল ৪-০০ ঘটিকায়  ৩৩৮/১, আহম্মদ নগর, পাইকপাড়া, মিরপুর-১, ঢাকায় ''মাসিক কবিতার আসর # ০১'' অনুষ্ঠিত হলো। ''মাসিক কবিতার আসর# ০১ ''-এর আসর কবি ছিলেন -  কবি আশফাকুর রহমান পল্লব এবং আসর সভাপতি- কবি অনিরুদ্ধ বুলবুল।

একে একে কবিগণ উপস্থিত হতে লাগলো। উপস্থিত হয়েই পরস্পরের সাথে পরচিত হয়ে আড্ডায় মেতে উঠলো। কবি ও কবিতা প্রাসঙ্গিক আড্ডা। আসর নামাজের পর সভাপতি ও আসর কবি তাদের নির্দিষ্ট স্থানে উপবেশন করেন। সভাপতির অনুমোদনক্রমে আমার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠান শুরু হলো। প্রথমে আসর কবি আশফাকুর রহমান পল্লব (এডমিন) এর লিখিত সংক্ষিপ্ত জীবনী তুলে ধরেন ধরি। অতঃপর, আসর কবি পর পর তার লেখা ৫টি কবিতা আবৃত্তি করেন। কবির কবিতা পাঠের পর কবি মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান, কবি জে আর এ্যাগ্নেস এবং কবি আবু হক মুসাফির আসর কবিকে শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করে বক্তব্য রাখেন।

এরপর, আজকের আসরে উপস্থিত কবিদের স্বরচিত কবিতা পাঠ চলতে থাকে। প্রথমেই কবি মোঃ ফিরোজ হোসেন তার সংক্ষিপ্ত পরিচয় তুলে বক্তব্য রাখেন। পরে তার স্বরচিত কবিতা আবৃ্ত্তি করেন। এরপর, কবি মো: মোজাম্মেল হোসেন এবং পর্যায়ক্রমে কবি জে আর এ্যাগ্নেস, কবি আলমগীর সরকার লিটন, কবি জাহিদ হোসেন রনজু, কবি এইচ আই হামজা ও কবি মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান সকলেই তাদের পরিচয় দিয়ে স্বকণ্ঠে স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন। এরমধ্যে, কবি রুনা লায়লার ছেলে রোহান একটি ছড়া আবৃত্তি করে। তার সুন্দর আবৃত্তি শুনে উপস্থিত কবিগণ বেশ প্রশংসা করেন।

মাগরিবের আজান দেয়াতে আসরের কবিতা আবৃত্তি অনুষ্ঠানের বিরতি দেয়া হয়। মাগরিব নামাজের পর মুড়ি-চানাচুর, কেক, মিষ্টি, কোমল পানীয়-এর সাথে চলে তুমুল আড্ডা। কবিতার ছন্দ, অন্ত্যমিল, ছন্দের প্রকার, শব্দের ব্যবহার, অপ্রচিত শব্দ কবিতায় ব্যবহার করা কতটুকু যুক্তিযুক্ত ইত্যাদি বিষয়ে আলাপ চলছে তো চলছে। সঞ্চালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত আমি মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে শুনছি আর ভাবছি উপস্থিত হওয়া কবিগণ কবিতা নিয়ে কতোই না ভাবেন এবং কতো কিছুই জানেন।  এক পর্যায়ে আড্ডার মধুর তর্কাতর্কি শেষ হলো। আবার শুরু হলো কবিতা পাঠের অনুষ্ঠান।

কবি ডলি পারভীনকে দিয়ে আবার শুরু হলো। কারন, তিনি চলে যাবেন। যেহেত তিনি ঢাকা শহরের শেষ সীমানা সূত্রাপুর থেকে এসেছেন তার ভাইকে সাথে নিয়ে। কিন্তু পাঠ করেই চলে গেলেন না। আরো অনেকক্ষণ বসে থেকে কবিতা আবৃত্তি শুনলেন। (তিনি চলে যাওয়াতে আমাদের গ্রুপ ছবিতে কবির ছবি নাই)। এরপর, কবি আবু হক মুসাফির এবং ক্রমান্বয়ে কবি জ. র. জিম, কবি মোঃ ফাহাদ আলী, কবি অনিরুদ্ধ বুলবুল (আজকের আসর সভাপতি), কবি মুহাম্মদ মনিরুল ইসলাম(মনির), কবি ফরিদ হাসান সবাই তাদের পরিচয় তুলে ধরেন এবং তাদের লেখা কবিতা আবৃত্তি করেন। সর্বশেষে আমি পাঠ করি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর জন্ম দিবস উপলক্ষ্যে (আজ ছিলো বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর ৮৮ তম জন্ম বার্ষিকী) আমার লেখা 'চির বসন্তের কবি' কবিতাখানি।

আজকের কবিতার আসরে আরো উপস্থিত ছিলেন কবি রুনা লায়লা (যদিও তিনি ছবিতে নেই)। তিনি শাররীক অসুস্থতার জন্য বেশিক্ষণ আসরে উপস্থিত থাকতে পারেননি এবং কবিতা আবৃত্তি করতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেছেন। কিন্তু বরাবরের মতোই আমাদের আসরে খাবার-দাবার সরবরাহ করে ভুঁড়িভোজের আনন্দ দান করতে কৃপণতা করেননি। আজ এডমিনসহ আমরা কয়েকজন কবি রুনা লায়লার অতিথি ছিলাম। তাই আমরা কবি রুনা লায়লাকে কবিতার আসরের খাদ্য বিষয়ক মন্ত্রী বলে অবহিত করে থাকি।

অতঃপর, এডমিন কবিতার আসরের উপস্থিত কবিদের কাছ থেকে বিভিন্ন সমস্যার কথা শুনেন। আসরকে কিভাবে আরো সুন্দর ও গতিশীল করে কবি ও পাঠকের কাছে উপস্থাপন করা হবে, সেই সম্পর্কে বিস্তারিত রূপরেখা তুলে ধরেন। এরূপ আলাপ আলোচনায় বেশ সময় কেটে যায়। সবাই আগ্রহভরে এডমিনের কথা শুনছেন। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বেরসিক সঞ্চালক আলোচনা রাশ টেনে ধরেন। অতঃপর, আবার আসর কবিকে তার লেখা কবিতা পাঠ করার জন্য অনুরোধ জানান। আসর কবি আবারও পর পর ৫ টি কবিতা আবৃত্তি করেন। করতালির মাধ্যমে উপস্থিত সকলেই আসর কবিকে অভিনন্দন জানান। এরপর, আসর সভাপতি কবিদের পরস্পর চেনা-পরিচয় এবং এরকম আসরের অনুষ্ঠানের সুফলগুলো তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন। আজকের আসর সভাপতি আগামী মাসের ২১ এপ্রিল,২০১৮, রোজ শনিবার অনুষ্ঠিতব্য ''মাসিক কবিতার আসর # ০২''-  এর সভাপতি নির্বাচন করেন। আসছে ''মাসিক কবিতার আসর # ০২''-এর আসর সভাপতি কবি মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান।  অতঃপর, আসর সভাপতি আসরের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

সমাপ্তি ঘোষণার পরও আসরের আলোচনা ও আড্ডা যেন সমাপ্ত হতে চাচ্ছে না। কেউ ঘর থেকে বের হতে চায় না। যেন আরো কতো কথা জমা এখনো রয়েছে। শেষ হতে চায় না। এরপর, পরস্পর বিদায় নিয়ে যখন আসর ছেড়ে চলে আসি তখন রাত্রি প্রায় ৯-৪৫ মিনিট।

১৭/০৩/২০১৮
মিরপুর, ঢাকা।

ছবি পরিচিতিঃ  প্রথম সারির বামদিক থেকে- সর্বকবি জে আর এ্যাগ্নেস, অনিরুদ্ধ বুলবুল, জ. র. জিম, আবু হক মুসাফির, আমি (কবীর হুমায়ূন), মোঃ মোজাম্মেল হোসেন, মোঃ ফিরোজ হোসেন।
পিছনে দাঁড়িয়ে বামদিক থেকে- মোঃ ফাহাদ আলী, মনিরুল ইসলাম (মনির), ফরিদ হাসান, আশফাকুর রহমান পল্লব (এডমিন), জাহিদ হাসান রনজু, মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান এবং আলমগীর সরকার লিটন।