(আজ ১৯, জুলাই। কিংবদন্তী কথাশিল্পী হুমায়ুন আহমেদ-এর
দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী। তাঁর অকাল মরনকে স্মরণ করে এ লেখার প্রয়াস)
অনন্ত নক্ষত্র বীথির উজ্জ্বলতর নক্ষত্র এক খসে পড়ে আজ,
নক্ষত্রময় রাতের বাসর- মেঘের উপর বাড়ি হতে;
অন্যদিন কবি হিমু কাব্যালোচনায় জলসা জমায়-
আজ বিষন্নতায় কাঁদে সে ময়ুরাক্ষীর পাড়ে একাকী।
রূপার পালঙ্ক মাঝে শুয়ে আছো তুমি, বাদশাহ নামদার,
অনন্ত অম্বরে গৃহত্যাগী জোছনা তোমাকে ঢেকে রাখে;
আজ শ্রাবণ মেঘের দিনে চক্ষে আমার তৃষ্ণা জাগে-
ক্রমশঃ সিক্ত হয় হৃদয় আমার গভীর বেদনায়;
আনন্দ বেদনার কাব্য নিয়ে এই আমি- তোমার জলকন্যা,
আজ কোথাও যাব না বলেও এসেছি শহীদ মিনারের পথে।
সমুদ্র বিলাস মৃন্ময়ীকে উত্তেজিত করে না আজ,
কারন, মৃন্ময়ীর মন ভালো নেই চারিদিকে বেদনার নোনাজল
আর অমাবশ্যার ঘন অন্ধকার; তাই আমি এবং হিমু
চলেছি নাঙ্গা পায় তেতুল বনে জোছনা ছড়াবো বলে;
শুভ্র এবং নীল এক অদ্ভুত আলোকধারার ঝলক-
নিস্তব্ধ চান্নী পসর রাইতের সৌন্দর্যের মতোন।
কোথাও কেউ নেই অথচ চারিদিকে অজস্র মানুষ এই মধ্যাহ্নে
ভিড় করে আছে তোমার ফেরার অপেক্ষায়, হে মহাপুরুষ!
ম্যাজিক মুন্সী কুটু মিয়া গৌরীপুর জংসন রেল ইষ্টিশনে
তোমার বল পয়েন্ট আর ফাউন্টেইন পেন নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে,
এক মুঠো রং পেন্সিল তুলে ধরে উদ্বেলিত হাতে
তোমার কাঠ পেন্সিলের ধুসর দাগ রাঙানোর ইচ্ছা নিয়ে।
জনম জনম হেটে চলেছো অজানা গন্তব্য পথে
স্বপ্ন ও অন্যান্য বাসনা নিয়ে ধীর পদ লয়ে;
যেন এক শবযাত্রা নিশুত রাতের অন্ধকারে
খুঁজে ফেরে অজস্র বৃষ্টিতে ভেজা জলপদ্ম;
দূরে কোথাও দারুচিনি দ্বীপ করিছে অপেক্ষা
তোমারই পদচ্ছাপ ধারণের গভীর প্রতীক্ষায়।
তখন তুমি কি বলবে অগণন মানুষের প্রতি-
‘আমিই মিছির আলি শোনাবো আজ জোছনা ও জননীর গল্প,
পেন্সিলে আঁকা পরীকে লয়ে স্বর্গের অলিন্দে একাকী
কাটাবো এইসব দিনরাত্রি, যখন নামবে আঁধার-
নক্ষত্রের রাত ঢেকে দিবে আকাশ ভরা মেঘ;
যখন মন্দ্রসপ্তক সৌরভ ছড়াবে লীলাবতী এক নন্দিত নরকে,
মাতাল হাওয়া উন্মাতাল হবে বৃষ্টি ও মেঘমালার ছোঁয়ায়;
যদিও মেঘ বলেছে যাবো যাবো অমানুষ নৃপতির দেশ ছেড়ে দূরে;
আগুনের পরশমনি জ্বালাবো কৃষ্ণপক্ষ রাতের গহীনে
ভেঙে দিয়ে অয়োময় শঙ্খনীল কারাগার, হবো দ্বিতীয় মানব।
ঢাকা/২৩-০৭-২০১২।