আমরা সবাই রাম ও রহিম ছিলাম যে ভাই ভাই,
পরস্পরে মিলেমিশে যার তুলনা নাই।
রামের বিপদ-আপদ হলে রহিম যেতো হেসে,
রহিম হতো আনন্দিত রামকে ভালোবেসে।
রহিম যদি বিপদে রয় এগিয়ে যেতো রাম,
মিলেমিশে থাকতো তাঁরা ছিলো না বদনাম।
ধর্ম ছিলো নিজের ঘরে, মন্দির-মসজিদে,
ঝগড়া-ফ্যাসাদ, দ্বন্দ্ব-বিদ্বেষ, মন্দের বিপরীতে।
রামের পুজোয় রহিম যেতো আনন্দ উল্লাসে,
পরস্পরে থাকতো মিলে রইতো না ভয়-ত্রাসে।
রহিম যখন ঈদের দিনে ফিরনি-পোলাও খেতো,
রামও সেদিন খুশি মনে সেই বাড়িতে যেতো।
রাম-রহিমের বান্ধবতা ছিলো অমলিন,
তাঁদের মাঝে ছিলো আসল মনুষত্বের ঋণ।
পূর্বপুরুষ একই রক্তে, ভুলতো না যে তাঁরা,
থাকতো ভাইয়ের মতো সুখে-দুখে পরম্পরা।
সেই মিলনে ফ্যাসাদ বাড়ায় চতুর ধান্দাবাজ!
উস্কানি দেয়, দ্বন্দ্ব করে, পরস্পরে আজ।
রাম রহিমের মুখ দেখে না, রহিমও রয় ফিরে,
ধর্ম নামের বর্ম পরে দুইজনে দুই তীরে
বসত করে, অসৎ হয়ে পরস্পরে আজ;
একে অপরকেই দুষেছে, বলে- দাঙ্গাবাজ!
এতে শুধু বিভেদ বাড়ে, রক্ত ঝরে, হায়!
স্বর্গ দেখে কাঁদছে আজি বাঙাল জাতির মায়।
একই মায়ের সন্তান তোরা ভুলে গেছিস, ওরে!
স্বার্থবাদীর ফন্দি মতো থাকিস, পরস্পরে
যুদ্ধ করিস, নিজে মরিস, মারিস তোরই ভাই,
ধর্মবেশ্যার জঙ্গিবাদে রইলে গা ভাসাই।
তাতে তোঁদের ক্ষতি ছাড়া লাভ কি আছে বল?
নিজেই নিজের ধ্বংস করে, নিজে হ'স দুর্বল।
রাম-রহিমের ঐতিহ্যের ভালোবাসার গান,
আয়, সবে আজ একসাথে গাই জুড়াতে এ প্রাণ।
মনুষ্যত্ব না যদি রয়, ধর্ম থাকে কই?
কোরান-হাদিস, বেদ-পুরান নয়তো শুধু বই!
সেসব বইয়ের কথা যদি মানিস মনে সত্যি,
ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করবি না একরত্তি।
গ্রন্থ বলে- মানুষ বড়, সত্য মানবতা,
তার প্রচারে সব অবতার আনছে ধর্মকথা।
ধর্ম ছোট্ট নয়,
মানবজাতির মানবতায় হোক ধর্মের জয়।
০৬/০৪/২০২৫
ঢাকা।