ওরা বলে, তোমার কথা বলা যাবে না কবিতায়;
তোমার পবিত্র নাম উচ্চারণ যাবে নাকো করা।
কখনো কি তা' সম্ভব হয়?
ঘুমন্ত বুকের মধ্যে তোলপাড় করে যেইজন,
যেইজন আগুনের ফুলকি উঁচিয়ে ধরে ঘোর অন্ধকারে,
চিন্তাশীল মানুষের মনে, চেতনায়;
তাকে কি কখনো ভোলা যায়?
ওরা কবিদের কবিতায় তোমায় নিষিদ্ধ করতে চাইছে,
হে আমার জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান!
বটবৃক্ষ উপরিয়া তারা শিমূলের চাষ চায়।
কি নিদারুণ ভাবনা তাহাদের, হায়!
এ সকল গিরগিটিরূপ কবিকুল সম্প্রদায়,
নেমেছিল একদা তুমুল প্রতিযোগিতায়;
কে কতটা বেশি মুজিবীয়!
অথচ তারাই আজ ক্রুরহাসি হেসে বলে যায়-
পনের আগস্ট নাকি নাজাতের দিন!
ওই আসমান থেকে ফেরেস্তারা নেমে এসেছিলো,
তোমাকে নৃশংসভাবে হত্যার নেশায়।
ওরা বিপ্লবী কথায় সমাজের সংস্কারক সাজে,
মানুষের চেতনার নিষ্পাপ গণতন্ত্রের টুঁটি চেপে ধরে;
কায়মনে চায় তারা খেলাফত ধারা!
ওরা "বাংলাদেশের জন্মকথা"র ইতিহাস শুনতে চায় না।  
একাত্তরকে ঢাকতে চায়,
মেটিকুলাস ডিজাইনের সন্ত্রাসী কাণ্ড-কারখানায়।
আজ ওরা চায় রিসেট বাটনের প্রহেলিকায়
ঢেকে দিতে আমাদের উজ্জ্বল সোনালী ইতিহাস!
একটি জাতির ইতিহাস মোছা যায় না কখনো,
তা-ও কি জানে না জ্ঞানপাপী আবিল মূর্খের দল!

এই জাতীয় কবিতা পরিষদের মঞ্চেতে বসে,
"এই জানোয়ারকে হত্যা করতে হবে"- একাত্তুরের পটুয়া
যেমন নিশঙ্কচিত্তে পেন্সিলে এঁকেছিলেন কোন একদিন-
"দেশ আজ বিশ্ব বেহায়ার খপ্পরে"।
আমিও সে মঞ্চে বসে লিখে যাই বাণী থরে থরে
কবিতার স্বরে।
দলদাস জলদাস হয়,
সে কবি হতে পারে না কখনো, নিশ্চয়।

ইদানিং খুব দেখি তাদের মনের অস্থিরতা,
কথায় কথায় আর চিন্তা-চেতনায়  
অদ্ভুতরকম মৃত্যুভয় খেলা করে।
সুচতুরভাবে বলে অহরহ, যথাতথা, বলে যায় তারা-
কুটিল চক্রান্ত যদি ফাঁস হয়ে যায়,
ফিরে যদি সত্যের মানদণ্ডের অমোঘ ধারায়
বাঙালির চেতন-বিশ্বাসী নেতা রাষ্ট্র-ক্ষমতায়;
অসুরের ন্যায় ধ্বংস হবে দুর্গতিনাশিনী হাতে ।
সত্যের ফলায় বিদ্ধ হবে বিচারের কুরুক্ষেত্রে,
শুধু ভেবে যায় দিনে-রাতে।

১৭/১২/২০২৪
জাতীয় কবিতা পরিষদ
কাজল মিলনায়তন, ইস্কাটন গার্ডেন, ঢাকা।