পৃথিবীর বুকে ফিরবো না আর চলে যাবো বহুদূর,
ডাকছে আমারে মরণপাড়ের নীলাভূ সমুদ্দুর।
আকাশ তারায় পাহাড় চূড়ায় উজান নদীর জলে,
লিখেছি এ নাম সযতনভরে দারুণ কৌতূহলে।
উতল মনের ছবি এঁকে গেছি কবিতার ক্যানভাসে,
পড়ে যদি মনে অবসর ক্ষণে দেখে নিও বিশ্বাসে।
ছিলো না লালসা কামনার বীজ ক্ষুদ্রাতি পরিমাণ,
তাতে ছিলো শুধু ভালোবাসা-প্রেম, জীবনের জয়গান।
জীবনযুদ্ধে যখন হেরেছি সান্ত্বনা লভিবারে,
লাজ-ভয় ছেড়ে গোপনে এসেছি তোমার মুক্তদ্বারে।
আমিতো তোমারে চাহিনি জীবনে, অভাগারে ভালোবেসে
নিয়ে গেছো তুমি অলকানন্দা স্বর্গপুরীর দেশে।
দিয়েছো মধুর সুখের পরশ বিরহ-কাতর প্রাণে,
অস্থিরতায় দিয়েছো শান্তি, স্বস্তির আহ্বানে।
আলো জ্বালাবার সাহস দিয়েছো নিঃঝুম নিশিরাতে,
শক্তি দিয়েছো পথ চলিবারে জীবনের সংঘাতে।
সব ভুলে গেছি, ভুলে যেতে হবে; তুমিও তা ভুলে যাও,
অসীম সাগরে ভাসিয়ে দিয়েছি জীর্ণশীর্ণ নাও।
অনাদিকালের বিরহ-বেদনা বুকের মাঝারে ধরি',
চলে যাবো আমি তাকাবো না ফিরে অনিন্দ্য রূপ স্মরি।
যেদিন গিয়েছে সকলি কি গেছে? কিছুই কি নেই বাকি?
আঙুলে আঙুলে সুখ-অনুভব! সকলি কি ছিলো ফাঁকি?
তমালের বনে আমরা দুজনে জাফরি ছায়ার তলে,
সারাদিনমান গল্প করেছি কতোই কৌতুহলে!
আমরা ছিলাম বিহগ-বিহগী ধূসর ধরণীকূলে,
অমৃত সুধায় পুলকিত হয়ে চেয়েছি মর্মমূলে।
জগতের যত প্রেমগাথা আছে স্মরণীয়, বরণীয়-
বিরহ-বেদন দুঃখ-কথার কান্নার সুর, প্রিয়।  
আনন্দ-হাসি, সুখ-শিহরণ সবকিছু হবে লয়,
দুঃখ-কষ্ট চিরভাস্বর বিশ্ব-জগতময়।
আমরা সকলে পরিযায়ী পাখি পৃথিবীর ছায়াতলে,
ক্ষণিক সময় খুঁনসুটি করি; অতঃপর, যাই চলে।
আমাদের প্রেম, মনের চাহিদা অপূর্ণ রয়ে যায়,
সব কিছু ছেড়ে চলে যেতে হয় জীবনের অবেলায়।
কেউতো কাউকে চিরদিন তরে রাখতে পারে না ধরে,
কোন্ কৌশলে তোমাকে রাখবো জীবনানন্দ করে?
অজানার দেশে চলে যাবো আমি, কাঁপছে পাঁজরখানি,
যত ভুল ছিলো ক্ষমা করে দিও, হে আমার অভিমানী!
খুঁজবো না আর অমৃত সাগর জীবনের পারাবারে,
কেউ কারো নয় ধুলোধূসরিত পৃথিবীর সংসারে।
সারাৎসারের কথা জেনে গেছি কঠিনেরে ভালোবেসে,
ভালো থেকো তুমি পৃথিবীতে, যাও আনন্দ-সুখে ভেসে।

১১/১২/২০২৪
ঢাকা।