অন্ধকারের গহীন থেকে আসলে তুমি মেয়ে,
ধ্রুবতারার চক্ষু মেলে রই অনিমেষ চেয়ে।
আঁধার আকাশ উঠলো হেসে,
উঠলো কাঁপন দেশ-বিদেশে;
একতারা-সুর বাজিয়ে তখন উঠলো এ মন গেয়ে-
'আর কতো দূর নিয়ে যাবে অতল নদীর নেয়ে'?
অস্তপারের ছবি ভাসে দূর আকাশের ভালে,
পরীর মতোন শরীর নিয়ে এলে নৃত্য তালে।
ছোট্ট ছোট্ট রাঙা পায়
ফুলের রেণু উড়িয়ে বায়;
জুঁই-চামেলি, টগর-বেলি দুলছে গাছের ডালে,
দ্বাদশী চাঁদ উঠলো হেসে তোমার গোলাপ গালে।
শূন্য বুকে ফুটলো আজি ব্যথার নীলোৎপল,
হাহাকারের হুতাশনে ঢাললে শীতল জল।
অমন সুখে পাগল মন
ভাবে তোমায় সারাক্ষণ;
খুঁজতে গিয়ে পাই না খুঁজে তোমার গহীন তল;
বিশ্ব-জগত ঘুরছি শুধুই নিত্য অবিরল।
ঝাউয়ের বনে বাতাস ছোটে দীর্ঘশ্বাসের সুর!
চেয়ে থাকি তোমার পানে বাইবে কতো দূর?
অতল নদীর শান্তজল
করছে শুধুই কোলাহল;
শ্যামল গাঁয়ের সাঁঝ বেলাতে লাগছে সুমধুর,
নয়ন মুদে ভাবছি বসে , হৃদয় ব্যথাতুর।
তরী তোমার চলছে ছুটে কোন পাহাড়ের চূঁড়ে!
ছুটছে যেন অচিনলোকে আকাশগঙ্গা ফুঁড়ে।
মাতাল হওয়া মন আমার
ঘুরে বেড়ায় বন-বাদার;
পরাণ খুলে গাইছি যে গীত তোমার সুরে সুরে,
ইচ্ছে মতোন বেয়ে চলো দূর থেকে ঐ দূরে।
তুমি যেনো দখিন হাওয়া কলাবতী বউ,
চক্ষু ভরা মায়া তোমার, বক্ষ ভরা মউ।
নেশায় দোলে আমার মন
পাগলপারা উচাটন;
তোমার চরণ তলে দিলাম আমার বুকের লউ,
ময়না-শালিক-টিয়ার মতোন এবার কথা কও।
রূপের বন্যা ছড়িয়ে দিলে বিশ্ব-চরাচরে,
বিমোহিত জগতবাসী চকিত অন্তরে।
দেখে আমি তোমার রূপ
আচম্বিতে হলাম চুপ;
বুকের মাঝে পেতে তোমায় মনটা কেমন করে,
উথাল পাথাল নদীর মতো আছড়াইয়া পড়ে।
তুমি যেন সকাল বেলার হাজার পাখির গান,
ঘুম ভাঙানো জলের স্বরের মধুর কলতান।
শিউলি ঝরা প্রভাত কাল
করছে আমায় উন্মাতাল;
পাপে-পঙ্কিল পৃথিবীতে তুমিই প্রভুর শান!
তোমায় পেলে দুঃখ সকল হবে অবসান।
মুগ্ধ রূপের শুদ্ধ মনের সরলা প্রিয়তি,
আমার সকল দুঃখ-কষ্ট নাশারই জগতি।
প্রাণ-সঞ্চারি অমিয়
বিলাও তুমি, হে প্রিয়!
অতৃপ্ত মন চাহে তোমায়, তা-কি জানো সতী?
তোমার ছোঁয়ায় কেটে যাবে আমার সব দুর্গতি।
২১/১০/২০২৩
ঢাকা।