হলুদ পাখি,
আমাদেরকে মায়ার বাঁধনে বেঁধে রেখে
তুমি মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে চলে গেলে!
যাওয়ার সময় বিদ্যুৎ ছিল না,
তাই বুয়ার কোলে চড়ে তুমি সিঁড়ি দিয়ে নামছিলে।
প্রথম ধাপটি নেমে তুমি ফিরে তাকালে,
হাসি দিয়ে ‘বাই-বাই’ জানালে।

এক পা দু’পা করে কেবল তুমি হাঁটতে শিখেছো।  
প্রায়ই আমি নামাজে দাঁড়ালে টের পেতাম,
কোথা থেকে যেন তুমি এসে
পেছন থেকে আমার পা দুটো জড়িয়ে ধরে আছো।
আমি সিজদায় গেলে, দ্বিতীয় সিজদার আগেই,  
আমার পা ছেড়ে হামাগুড়ি দিয়ে সামনে এসেছো,  
ঠিক সিজদার জায়গাটায় বসে আমাকে দেখছো।  

সালাম ফিরিয়ে আমি তোমার কচি হাত দুটো
আমার হাতে ধরে মুনাজাত করতাম,
তুমি মন দিয়ে শুনতে, তার পর চলে যেতে।  
ল্যাপটপে লেখালেখির সময়
তুমি আমার কোলে চড়ার আব্দার জানাতে।
আমি কোলে তুলে নিলে
আমার মুখের দিকে তুমি কয়েকবার তাকাতে।  
তারপর একটা একটা করে কী-প্যাড চাপতে।    
মনিটরে অক্ষরের নড়াচড়া দেখে তুমি খুশি হতে।    

অল্প কিছুদিনের জন্য তুমি নানুবাড়ি বেড়াতে গেছ,
কিন্তু এতেই আমার ঘর শূন্যতায় ভরে গেছে।
হঠাৎ হঠাৎ করে বলে ওঠা তোমার কচি মুখের বোল,  
আর ঘুমের সময়ে তোমার কান্নার রোল,
এখনো আমার কানে বেজে চলেছে।
তোমার ভুবন ভোলানো মিষ্টি হাসি
বারে বারে আমার দেখতে ইচ্ছে করছে।


ঢাকা
২৭ অগাস্ট ২০২২

('হলুদ পাখি', কারণ যাওয়ার সময় সে একটা হলুদ রঙের সুন্দর ফ্রক পড়া ছিল)