প্রথম পর্ব:
বয়স তখন তেরো,
বাপ মায়ে আলহাদে
ডাকে অালাপী।
বাবুদের বাড়ি,
আসবাব সারি,
ধুলো ঝেড়ে চকচকে,
কাটে তরকারি।
দেওয়ালে সময় কাটা,
টেবিলে পার্শে বাটা,
নিমেষে লুকিয়ে পড়ে
মোটাসোটা ধড়ে,
একা পড়ে শিরদাঁড়া কাঁটা।
ভেজা চুলে হাত খোঁজে হাঁড়ি,
আর বেঁচে যাওয়া বাসি তরকারি,
অমৃত গ্রাসে চোখ দুটো ভারী,
ছোড়দাদা হাঁক দেয়,
কিছু দরকারী?
জানালার ধারে,
বালিশের ঘাড়ে,
চোখ বোজা ছোড়দাদা,
ধোয়া রিং ছাড়ে।
দুটো পা এগিয়ে
আলাপীর কোলে,
" শহরে তে পড়ি আমি"
বলে কৌশলে।
নিষ্প্রাণ হাতে,
কম্পন দাঁতে,
মর্দন চলে,
এই বুঝি ছোড়দাদা গায়ে গায়ে ঢলে।
মাস দুই পরে,
কাজ গেলো চলে,
এবার কি অালাপী
খাবে পেটে ভরে?
(দ্বিতীয় পর্ব:)
বয়েস এখনও তেরো,
আজ অালাপীর বিয়ে।
বর বছর দশেক বড়ো,
কল্কের দাগ হাতে,
মোটা পন দিয়ে।
নতুন বর, আর
অালাপীর কুঁড়েঘর,
পাশেই গোয়াল আর,
পুরনো খড়ের গাদা।
দুদিন আগের শিশু,
শিখেছে অনেক কিছু,
কিন্তু কার বেশি জোর,
নতুন বর,
নাকি পুরানো ছোড়দাদা।
দিন কাটে দিন যায়,
সব জোর সয়ে যায়,
চোরকাঁটা বিঁধে,
কাদাঘাম মেখে, সেকি তার সাজ।
অস্থির বর ,হাতে হাত ঘষে,
অালাপীর বশে একশো দিনের কাজ।
(তৃতীয় পর্ব:)
সাত মাস সাত দিন,
হারিয়ে সকল লাজ,
গতর টা নড়বড়ে, হয়েছে বেশ ভারী,
এখনো ভরেনা পেট,
যদিও সমাজ বিধীত পূর্ণ সে নারী।
শরীরে ক্লান্তি ভাব,
বাড়িতে ফেরার তাড়া,
সকলে রয়েছে মাঠে, আর ফেলে আসা কাজ।
উঠোনে পড়ন্ত রোদ,
কেউ যে দে না সাড়া,
পড়শী শুয়েছে খাটে,
পাশে অালাপীর বর, কপালে গভীর ভাঁজ।
ওই বুঝি মুখ খোলে,
ঘুষিতে চোখ ফোলে,
সজোরে টান চুলে, সাথে কিল চড় লাথি।
হঠাৎ জ্ঞ্যান ফিরে, দ্যাখে
কে রয়েছে ঘিরে,
চেনা মুখ কেউ নওয়, হাতে ছুরি কাঁচি।
কিলো দুই ছেলে,
রেখেছে ট্রে তে ফেলে,
গায়ে তার কালশিটে দাগ।
"দোষ নেই কারো,
পিছলে গিয়েছে পা",
অশ্রুতে চুল ভেজে,
গলেনা জমাট রাগ।