//জীবন চলে না ইচ্ছামতন//

ডিগ্রী চাই, তাই কলেজে প্রবেশ
চায়নি সে হতে বিজ্ঞান
দামী গাড়ি চড়ে আসত কলেজে
নিতে নয় কোন জ্ঞান।

উপস্থিতিতে ঘাটতি ছিল না
অতি অনুগত ছাত্র
কেন সে আসত প্রত্যেক দিন
বলার ইচ্ছা মাত্র।

কলেজ মানেই আড্ডার স্থান
সহজেই ভেবে নিত
ভাববে না কেন! সঙ্গীরা সাথে
পকেটেও ভরা অর্থ।

কলেজ কী আর কারো ঘর নাকি!
আড্ডার উত্তম স্থান
এই ভাবনাতে থাকতো সে ডুবে
এতেই রাখত মান।

ক্যান্টিন থাকে সব কলেজেই
সেখানেই হৈ হুল্লোড়
এটাই তো এক অস্থায়ী ক্লাব
আড্ডাও চলে বিস্তর।

সে ছিল আমার এক সহপাঠী
জানতাম তাকে চিনতাম
বন্ধুর স্থানে বসাতে পারিনি
এই সেই বলে কাটাতাম।

সে যে ছিল ধনী পরিবার থেকে
সকলের জানা ছিল
কয়েকজনের সান্নিধ্য সে
সহজেই পেয়েছিল।

আমরা সবাই হলাম স্নাতক
সেও আমাদের সাথে
যে যার মতন পেলাম জীবনে
কলেজ জীবন অতীতে।

কোন পথ ধরে সে হল স্নাতক
আমরা সকলে জানি
উপযোগী হয়েছিল তাঁর ধন
হয়েছিল কানাকানি।

দুই এক জনকে আজও মনে আছে
যাঁরা হয়েছিল ঘনিষ্ঠ
ধনী ছাত্রের কথা মনে রেখে
করিনি মন অতিষ্ঠ।

জীবন চলে না ইচ্ছে মতন
বহু কিছু আসে সামনে
ধনী ছাত্রের সাথে দেখা হল
মামুলি একটা কারণে।

জন্ম শংসা-পত্র ছেলের
আনতে যখন গিয়েছি
লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষাতেই
এই সেই কিছু ভাবছি।

অনেকের মতো মুছে গিয়েছিল
যে আমার মন থেকে
তারই নাম ছুটে এলো এই মুখে
সে দাঁড়িয়ে সন্মুখে।

ঘটনা ভালো বা হবেই মন্দ
মানব জাতির ঘটনা
ঘটনা ঘটছে এই ভূবনেই
কোনটাই নয় ধারণা।

হঠাৎ কাঁধের উপর এক টোকা
মাথা ঘুরিয়েছি দেখতে
দেখলাম সেই ধনী ছাত্রকে
মৃদু হাসি নিয়ে মুখেতে।

তাঁর মুখ থেকে কথা ছুটে এলো
তুই তো নীলাঞ্জন!
ঠিক চিনেছিস এক যুগ পরে
সন্দেহে অবগুণ্ঠন।

আমি বললাম তুই সোমনাথ
পৌরসভায় কেন!
নিশ্চয়ই কোন ব্যবসার কাজ
সহজ অংক যেন।

আমি ভুল, সেটা প্রমাণ করলো
সোমনাথ মুখ খুলে
পৌরসভার সে এক কর্মী
শুনলাম মুখ তুলে।

অকথনীয় ধনী পরিবার
সোমনাথ একজন
সে এক কর্মী পৌরসভার!
অভাবনীয় মন্থন।

গরীব হয়েছে বেশ বুঝলাম
সে এক অন্য কাহিনী
ভাগ্যিস হয়েছিল সে স্নাতক
করণিক হতে ছাড়েনি।

ভাগ্যের পরিহাস বলব কি!
জীবন অনিশ্চিত
প্রয়োজন আছে গড়ে তোলবার
ভবিষ্যতের ভিত।

সুবীর সেনগুপ্ত