সাম্যের কথা বলি-
মার্কস, লেলিনের মানবতাবাদ সারা বিশ্বসভায় বলি।
আব্রাহাম লিংকন, স্মরি যে তোমায়, স্মরি যে গ্যাটিসবার্গ,
সারা বিশ্ব রাঙিয়েছো খুনে, শোষিতের প্রতিবাদ।
মধ্যপ্রাচ্য, আরববিশ্ব, গোলকপৃষ্ঠ জুড়ে,
কোথায় তুমি এনেছ শান্তি? মানবতা দিছো তুলে!
অণুকে ভেঙ্গে পরমাণু হয়েছে, এসেছে দুঃশাসন,
হিরোশিমা আর নাগাসাকি স্বাক্ষী, পুঁজিবাদ-নিষ্পেষণ।
চেয়ে দ্যাখ ঐ প্যালেস্টাইন, শান্তি কপোত কাঁদে।
কার্পেট বোমা, ইরাক চষিছে, মানবতা ফোঁসে ক্ষোভে।
কোথায় লাদেন? কাহার সৃষ্টি? কাহার এই অপকাম?
খেলিছে শিশু অস্ত্র খেলনা, দেখ আফগানিস্থান।
ক্ষুধার জ্বালায় কাঁদে আফ্রিকা, নেই সেথা নরিয়েগা,
গঞ্জালেসের পেরু কাঁদে শোনো, দক্ষিণ আমেরিকা।
সেপ্টেম্বরের এগারো তারিখ, কাহারই কল্পনা?
বিশ্ব মিডিয়া করিছে দালালি, কাহার এ মন্ত্রণা।
পূর্ব-বলয়, পশ্চিম-বলয়; উত্তর-দক্ষিণ মেরু,
আগুন জ্বলিছে তামাম বিশ্বে; শান্তি আসেনি কভু।
গ্লাস্নস্টস্ আর প্রেরেস্ত্রইকা, প্রেসক্রিপশন কার?
গর্বাচেভের শান্তি কোথায়? সম্মান রাশিয়ার?
‘ব্যক্তি-স্বাধীন ছিল না’ বলিছে, আন্দ্রে শাখারভ,
মায়া-কান্না কাঁদিছে ইউ.এস., মোড়লী মহোৎসব।
কোথায় আজি লেস ওয়ালেসা? ডক ইয়ার্ডের কুলি?
বিশ্ব কাঁপানো শ্রমিক নেতা, গালভরা বড় বুলি।
চসেস্কু আজ ফিরিতেছে সদা, রুমানিয়ার ঘরে ঘরে,
গণতন্ত্রের স্বাদ মিটে গ্যাছে সেথা, বেশ্যাবৃত্তির ভারে।
দাঁত বের করে হাসছো কারা? সমাজতন্ত্র গ্যালো?
কান পেতে তবে শোন পাষণ্ড, তোমাকে বলছি, হ্যালো-
মানবতা আর সমাজতন্ত্র, মুদ্রার দুই পিঠ,
মিডিয়ার টোপ গিলেই তোমার, মাথায় লেগেছে গিট।
এক পাক্ষিক বিশ্বায়নের, প্রতিহিংস রূপ,
হত্যা করিছে বিশ্ব মানব, দেখেও থাকবে চুপ?
‘মানবতা’ বলে বিশ্বে যখন থাকবে না আর কিছু-
সেদিনই আসবে মার্কস, লেলিন আর শান্তির ধুমকেতু।
(কাব্যগ্রন্থঃ কৃষ্ণ ছায়ায় আবৃত আপাদমস্তক, অন্বেষা প্রকাশন, প্রকাশকাল – ২০০৮)