কী এক নীল বেদনা নিয়ে ঘুরি ফিরি
প্রশ্ন করি- আমার যৌবন আজ কোথায় দাঁড়াবে।
প্রশ্ন করি -এই যে সবুজস্নাত প্রেমময় স্বদেশ আমার,
কোথায় দাঁড়িয়ে আছে সে!
নাকি ভেসে গেছে অথই জলে,
চলে গেছে অন্য কোনো ঘরে!
হে আকাশ হে মাটি হে অনাবৃতগোপন পৃথিবী আমার, চাই নি তো চেতনার ঘরে
অস্পৃশ্য অমানিশা
চাইনি শুধু আমার কলসেই জল
চেয়েছিলাম -তুমি তোমার কথা বলো
বলতে দাও আমার কথা আমাকেও
চেয়েছিলাম- আমাদের আঙিনায়
খেলে যাক সুর্দোয়ের লালনীল দীপাবলি
তারপর তোমার সকাশে এসে
মনে হলো- যদিও রাত্রি তরুণী
তবু যেনো রাত হয়ে গেছে
হয়ে গেছে আরও কতোকিছু!
যেমন -পবিত্রতমা স্বরসতী দেখে
আমি ভুলে গিয়েছিলাম – ‘ শহিদের রক্তের চেয়ে বিদ্যানের কালি উত্তম’
ভুলে গিয়েছিলাম- ‘ দুর্জন বিদ্যান হইলেও পরিত্যাজ্য’ -পরস্পরবিরোধী এসকল সুসমাচার, হয়তোবা বাণী।
যেমন- কবিতার কাছে গিয়ে আমি শিখেছিলাম ছন্দপতনের ছন্দময়তা
যেমন -পর্নো গ্রাফির বিরুদ্ধে বলতে গিয়ে তমালিকা করে নিচ্ছে এক গুচ্ছ
পর্নো প্রদর্শন।
আমার দেখার মধ্যেই নাকি ভুল ছিলো! –
এ কথা প্রমাণ করতে উঠে পড়ে
লেগে গেলো সাম্প্রদায়িক সম্প্রদায়
আমি বক ধার্মিকদের দেখে
হতে চেয়েছিলাম ধর্মহীন বালক
কম্যুনিজম ক্রাশ করলেও মিথ্যে নয় ‘ডাস ক্যাপিটাল’ – এরকম আমার বিশ্বাস জানবার পরেও ‘যুবক অনার্য’
শব্দবন্ধের পাশে মৌলবাদির ট্রেডমার্ক
বসিয়ে দিতে চেয়েছিলো আজিজপাড়ার
কতিপয় শব্দহন্তারক অপুরুষ
আমি তসলিমার লেখাকে ধ্রুপদী নয়- বোলবার
সঙ্গে বলে দিতে পারি –
তসলিমা শিল্প করে তুলতে ব্যর্থ হয়েছেন
কাগজে লেখা ‘যৌনতা’ তার
শুধু কি জনপ্রিয়তা প্রিয় বোলে তার
নাকি তিনি ‘তসলিমা নাসরিন’ বোলে!
আমি আমার ভেতর আটকে রেখেছি
এক মস্ত জেলখানা
আমি সমুদ্রকে ডুবিয়ে দিয়েছি
আমার ভেতর
আমি জরি-কে লুকিয়ে রেখেছি কতোদিনভর, জানবার পরেও যে,
জরি আজ ভুলে গেছে কে ছিলো জরি আর
নীল ছিলো কে।
ঠা ঠা করে হাসতে গিয়ে আমি
গুলিয়ে ফেলি মন্ত্রধ্বনি আর উলুধ্বনির
তফাৎ থাকলেও উলুধ্বনিই আমার কাছে প্রিয়
কেননা সে সময় জরির দিকে তাকিয়ে আমি
চেয়ে থাকতাম তার বিশেষ কিছুর দিকে,
সেই বিশেষ কিছু ব্যবহৃত হতো কেবল উলুধ্বনি হ’লে।
কিন্তু এসবের সংগে কবিতা কিংবা সম্পর্ক নেই রাজনীতির
সম্পর্ক নেই মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের
যদিও ভাগ্যের সংজ্ঞাটিও রয়ে গেছে অনির্ণীত
বিংশ শতাব্দি পেরিয়ে যাবার পর
যখন একবিংশ এসেও প্রমাণ করে দিলো
একসঙ্গে মরে গেছে মানুষ এবং তার ঈশ্বর- দুজনেই !
আসলে আমি তাই হতে চেয়েছিলাম
যা আমি নই
তা আমি নই বোলেই স্বপ্ন দেখি –
একদিন প্রেম প্রেগন্যান্ট হয়ে, এসে
জড়িয়ে ধরবে আমাদের
বোলবে সেইদিন- নীল বেদনার সঙ্গে সখ্য হলেও
ফিরে আসবে না জরি
ফিরবে না প্রিয়তমা স্বদেশ তোমার
যদি চলে যায় অন্য কোনো ঘরে
উলুধ্বনি আর মন্ত্রধ্বনির মধ্যে তফাৎ থাকলেও
সাদৃশ্য থেকে যায় যেহেতু দুটোই এক ধরনের
সংস্কারের চেয়ে বেশি কিছু নয়।
প্রেম, প্রেগন্যান্ট হয়ে বোলবে সেইদিন
– পৃথিবীতে কবিতার দিন
ফিরিয়ে আনতে হ’লে
সভ্যতার পোশাক খুলে দেখে নাও
অসভ্য শরীর!