আমাকে বোলো না- থেমে যাও
রক্তাক্ত প্রান্তরে তবে তোমাকেও রঞ্জিত হতে হবে
কুকুর আর শেয়ালেরা খুবলে খেয়ে নেবে তোমার চোখ বুক হৃৎপিন্ড সমস্ত শরীর
তারপর ক্রমশ খাবে তোমার মা মেয়ে বোন নিষ্কলুষ বধুটি আর
এমনকি নিষ্পাপ মেয়ে শিশুটিকে
তারপর খাবে পাড়াপ্রতিবেশি খাবে বৃক্ষ নদী
খেয়ে নেবে রোদ্দুর জোছনা ভরা রাত
খেতে চাইবে আজন্ম লালিত তোমার ঈশ্বরকেও
পারবে এসব থামাতে তুমি!
দ্যাখো না, মানুষেরা অফিসপাড়া থেকে এসে
দোকানপাট ব্যবসায় থেকে এসে
দরোজা ভেজিয়ে চোখ মেলে ঘুমিয়ে আছে
যেনবা মাছের মতন
এই রক্তঘেরা ঘর আর সিঁড়ি বেয়ে উঠে যাওয়া
ঘরের ভেতর মানুষের রূপ দেখে শূন্যতাও শিউরে ওঠে বুঝি
বুঝি এই এলো শ্মশানের ডাক
কতো দিন আর আর কতো দিন এইভাবে
শুধু এইভাবে নিজেকে শেষ করে বেঁচে থাকবার অদ্ভূত স্বপ্ন দেখবে তুমি!
এ মৃত্যুর দেশে আর কোনো সত্য বেঁচে নেই
বেঁচে নেই সুন্দরতা কোনো
হে মাঝি হে রূপালি দ্বীপ
তোমাদের পরষ্পর আলিংগনের মৃদু ইচ্ছেটিকে
নিয়তিও ঈর্ষা করে বুঝি
এ লগনে এই মধুমাসে- এসব শব্দভান্ডার কেবলি মুখ থুবড়ে পড়ে আছে অভিধানের ছেঁড়া ঠোঁটে
তোমার এ দ্রোহের অনল নিয়ে পুড়ে যেতে
চাইবে কে আর
বলো বলো হে কবি!--
আমাকে শুনিয়ে এসব নেই কোনো লাভ
আমি তো বেরিয়ে আসবোই
সবকিছু অথৈ রকমের অবহেলা করে
আমাকে কে আটকে রাখবে বলো
মরণ- সে যে আমার জন্মের চেয়ে অধিক প্রিয়জন
জীবন? সে যে আমার কাছে
গোলাপের বিশুদ্ধ সৌরভ,
যাকে ভালোবেসে আজ কেবলি মরে যেতে
সাধ হয় বড়ো
বলো তুমি বলো
তবু্ও থামতে বোলবে আমায়
বোলবে থেমে যেতে? না, এ হয় না হতে পারে না
আমি থামবো না
হোক না প্রতিটি পুরুষই একেকজন খুনী
কসম আমার নারীজন্মের কসম
আমি থেমে গেলে থেমে যাবে
পুরুষের জন্মের উৎসব
থেমে যাবে নারীজন্মের বিজয়উল্লাস
আমাকে নারী হতে দাও
আমাকে জননী হতে দাও
আমাকে বধু হতে দাও
আমাকে বিজয়ী হতে দাও
আমাকে আমি হতে দাও
নইলে থামিয়ে দেবো মানুষজন্ম তোমার।