তাহারে এখনো ভুলি নাই
ঐ যে যার কথা বললাম তাহাকেই।
সে গোপন মনের পিঞ্জরে শক্ত করিয়া বাসা বাঁধিয়াছে। যতবার তাহাকে ছাড়িয়া যাইতে চাই ততবার সে আমারে আকড়াইয়া ধরে।
সে পরম আদরে আমার বাহুদুখানা জড়াইয়া থাকে। আমি যতবার তাহারে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করিয়া দূরে ঠেলিয়া ধরি, ততবার তাহার আহ্লাদি চোখ আমার মন পোড়ায়। আমার ভিতর বাহির করে জ্বলাঞ্জলি।
সে বার বার আসে, যখন তখন আসে। সে একান্ত মনের চুপিসারে ঘুমের ঘোরে স্বপ্ন হয়ে আসে। সে আসে একান্ত নীরবে আমার গোপন মনের অন্তপুরে..
তাহারে ভুলি নাই, কারণ সে আমারে ভুলিতে দেয় না। সে আমায় কেবলই তছনছ করিতে আসে। সে প্রেমের ডালি সাজাইয়া আমারে ডাকিতে আসে, সে তার প্রেম উদ্যান সাদা দুধ রঙা দোলনচাঁপায় সাজাইয়া আমারে বাকিতে আসে। তাঁর ভুবন বিলাসী সুগন্ধ সৌরভে মুগ্ধ করে আমায়।
কত বার তাহারে বলি দূর হও হে কল্প মনের রাজন। দূর হয়ে যাও অনন্ত লোকে। বিচ্ছেদ আনো মনে। বিরহে বিরহে ভিজাইয়া দাও আমার স্যাত স্যাতে শেওলা চোখের দেওয়াল।
সে পাগলের মতো প্রলাপ বকে যায় একান্ত মনে। সে চিৎকার করে বলে তুমিই ছিলে আমার কল্প মনের মানস কন্যা। ছিলে হৃদয়াকাশে মধ্য দুপুর হয়ে। তুমি ছিলে অন্ধকার রাতের তারা ভরা জোৎস্না।
তুমি ছিলে আমার গোপন মনের সুখ স্বপ্ন। তুমি ছিলে অন্তরাত্মার এক অসীম মায়া।
তুলি ছিলে মেঘলা দিনের সাত রঙা রংধনু। তুমি ছিলে শুষ্ক মরুভূমে এক পশলা বৃষ্টি। অথচ এই তুমি আমারে তুচ্ছ করিয়া দূরে ঠেলিয়া দিয়াছ? আমার কোমল পদ্ম পরাগ হৃদয় খানা ভাঙ্গিয়া তছনছ করিয়াছো? ওহে নির্মম নিষ্ঠুর কেন এত হেলা আনো মনে? কেন এতো অভিমান পাঁজরের ভাঁজে ভাঁজে রেখেছো যতনে?
আজ তুমি কেবলই কিছু খণ্ড স্মৃতি। কিছু অবিস্মৃত স্বপ্ন। তুমি ভিন্ন জগৎ রচিয়াছ আজি। তাহলে কেন অমন করিয়া ডাকিয়া উঠ রাজন? তবে কেন অবচেতন মন তরঙ্গে ঢেউ তোল হে মানব? কেন এমন ব্যস্ততার মাঝে হন্যে হয়ে আমায় খোঁজ?