চির সৌন্দর্যের লীলাভূমি সবুজের রাজকন্যা ত্রিপুরা ছেড়ে যখন আগরতলায় ইমিগ্রেশন চলছিল ভদ্রলোক আমার ওনাকে প্রশ্ন করলেন কেন এসেছিলেন আগরতলায়? ওর উত্তর কবিদের একটি সম্মেলন ছিল। তারপর উনার সামনে আমি পা রাখতেই আমাকে প্রশ্ন করলেন, আপনি লিখেন? আমি বললাম হ্যা। উনার পরের প্রশ্ন... কি কি লিখেন?
আমি বললাম... কবিতা, ছোট গল্প, প্রবন্ধ, সেই সাথে উপন্যাস যেটি ৫০০ পেইজের হবে প্রুফ চলছে।
উনি শুনে অবাক হয়ে বললেন... ওয়াও সাহিত্যের সব শাখায় আপনার বিচরণ? আমি বললাম... উপরওয়ালা চাইছেন তাই লিখছি। একটু বাড়িয়ে বলার ইচ্ছে থেকেই বলে ফেললাম আপনাকে নিয়েও লিখতে পারি। সাথে সাথে উনি বললেন আমার সাথে মাত্র ২ মিনিটের দেখা কথা বলা, আমাকে নিয়ে কি লিখবেন? আমি মনে মনে বললাম যদি কোনো কারণে ছুঁয়ে দেন কবি লেখকদের মন তবেই হয়েছে কবি লেখকরা লিখে ফেলেন কবিতা গল্প উপন্যাস।
উনি কাজ করছেন আমি দাঁড়িয়ে, আমার পাসপোর্ট হাতে দেবেন তার পূর্বে বলে ফেললেন "মুগ্ধ হলাম" উনার শেষ কথাটা আমারও অন্তর ছুঁয়ে গেল। প্রশ্ন থেকে গেল মনের গভীরে...এত অল্প সময় যার সাথে কথা বললাম উনি কেন মুগ্ধ হলেন? যাহোক আমি আমার হৃদয়ানুতি ধরে রাখতে পারিনি বলেই একটি স্মিত হাসি দিয়ে বিদায় নিলাম আর মনে মনে বললাম "আমিও মুগ্ধ হলাম।"
আর তাই হয়তো আমার কলমের আঁচড়ে লিখে ফেললাম আমার হৃদয়ের অনুভূতি। সেই সাথে ভাবছি এমন একজন মানুষের মনে যদি থাকে সাহিত্যের প্রতি অনুরাগ, থাকে ভালোবাসা তাহলে পুরো আগরতলা জুড়ে কত কিই না আছে? বুঝতে পারি বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যেখানে পা রেখেছেন সেখানে বাংলা সাহিত্যের বুননটাও হয়েছে গভীর। উপলব্ধি করি পুরো আগরতলা জুড়েই রয়েছে বাংলা সাহিত্যের এক বিশাল ভাণ্ডার। তাইতো প্রতিটি মানুষের হৃদয় কতনা সুন্দর।
আসলে আমাদের মহান মনের কবি পরিতোষ ভৌমিকের কথা বলতে গেলে শেষ হবেনা। উনার হৃদয়খানা কত মহৎ কত মহান না হলে এত আয়োজন এতগুলো মানুষের জন্য কবি এতকিছু করতে পারেন? কবি "পরিতোষ ভৌমিক অমায়িক কবি আপনি অনন্তকাল এভাবেই সকল মানুষের হৃদয়ের মনিকোঠায় উজ্জ্বল হয়ে থাকুন।"
আমি মনে করি প্রতিটি কবি হৃদয় আঁচড় কেটেছেন কবি ভৌমিক তার আপন মহিমায়.... তাই এর চেয়ে আর বেশি কিছু লিখলাম না কবি ও সুবিশাল আয়োজন সম্বন্ধে। তবে আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করি কেউ বলতে পারুক বা না পারুক যারাই এই বাংলা কবিতা কাব্য বাসর ও কবি সম্মিলন ২০২৩ এ উপস্থিত ছিলেন সবার হৃদয় বর্ষার জলধারার মতোই কানায় কানায় পূর্ণ।
সব শেষে আবারও উচ্চারণ করি ভারতের ত্রিপুরা আগরতলায় যেখানে বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শত বছর পূর্বে পদধূলী রেখে করেছেন ধন্য, আজ তাঁর ক্ষীণ বাতাসের মৃদু স্পন্দনে আমরাও হয়েছি ধন্য।
হে ঐতিহাসিক আগরতলা
তুমি আবারো হয়েছ ইতিহাস।