একদিন আমি থাকবো না
সেদিনও হয়তো এক কাপ কফি নিয়ে,
সুপর্ণা আসবে আমার ঘরে।
কিন্তু দেখবে আমি নেই।
হয়তো গাল বেয়ে এক ফোঁটা অশ্রু,
মুক্তির খোঁজে গড়িয়ে পড়বে নিচে।
সেদিনও হয়তো চড়ুই পাখিদুটো,
প্রেমালাপ করবে কিচিরমিচির করে।
আমাকে দেখার জন্য হয়তো
বসবে দুজন জানালার কাছে এসে।
কিন্তু ওদের দেখার জন্য
হয়তোবা আর থাকবো না আমি বসে।
আমার কবিতার ডায়েরী যতগুলো,
হয়তো পড়বে সুপর্ণার চোখে।
নিতান্তই কৌতূহলের বশে,
হয়তোবা সে পড়বে ওগুলো আবেগাপ্লুত হয়ে।
নয়তো রইবে ড্রয়ারের কোণে,
অবহেলা আর সময়ের ছাপ নিয়ে।
ক্যাসেট প্লেয়ারে বাজবে সেদিনও গান,
একাকী বসে আমার কথা ভাববে সুনন্দা।
কিন্তু সেদিন রইবো না আমি,
গানের সুরে মেলাবো না সুর আর।
সুরগুলো সব হারিয়ে যাবে শূন্যে
মিলবে না আর সুরের সাথে আমার।
কিন্তু আমি তো মরতে চাইনি এভাবে।
মরতে চেয়েছি কিংবদন্তীর মতো।
কফিনের ওপর ফুলের পাহাড় জমবে,
ছাড়িয়ে যাবে আড়ম্বরের মাত্রা।
বিদ্রোহীদের মিছিলের মতো হবে,
মৃত্যুর পর আমার শবযাত্রা।
আমার মৃত্যু মহোৎসোবের ঘটায়,
পুরো জাতি যেন ভেঙে পড়ে কান্নায়।
শোকের মাতম জাগবে চারিদিকে,
রাষ্ট্রীয় শোক করা হবে ঘোষণা।
আড়ম্বর আর গৌরবের নিচে,
চাপা পড়ে যাবে আমার মৃত্যুবেদনা।
মৃত্যুকে আমি করবো আলিঙ্গন,
জীবনের চেয়ে মৃত্যু যেন অধিক গৌরবোজ্জ্বল।
গর্বিত হবে সুপর্ণার অশ্রুবিন্দুগুলো,
গর্বিত হবে জনতার হাহাকার।
মৃত্যুদেবীও গর্বিত হবে হয়তো,
মৃত্যুদাতা হয়েছে বলে আমার।
সেই গৌরবে থাকবে কিছুটা বেদনা,
কষ্ট থাকবে আমায় হারিয়ে ফেলার।
দিন কয়েকে ভুলে যাবে সকলেই।
থাকবো হয়তো আমার কাব্যের মাঝে,
নয়তো সুপর্ণার চোখের কোণে থাকবো,
চাপা যন্ত্রণার প্রতীকস্বরূপ অশ্রু জলের সাজে।